Monday, May 6সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

পারমাণবিক চুল্লি রূপপুরে

তুহিন হোসেন, পাবনা: দেশে নির্মাণাধীন একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পাবনার রূপপুরে দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লি (রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল) আগামীকাল বুধবার স্থাপন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ রিঅ্যাক্টর চুল্লি স্থাপন উদ্বোধন করবেন।

পারমাণবিক চুল্লি স্থাপনকে কেন্দ্র করে রূপপুরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। অনুষ্ঠান সফল করতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান রূপপুরে অবস্থান করছেন। তিনি অনুষ্ঠানের সার্বিক বিষয়া তদারকি করছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন রাশিয়ার পরমাণু শক্তি সংস্থা রসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ।

মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা প্রকল্প এলাকায় আসতে শুরু করেছেন। এরই মধ্যে আসতে শুরু করেছেন রাশিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও দেশটির সাংবাদিকরা। এছাড়া চুল্লি উদ্বোধন অনুষ্ঠান সম্প্রচারের জন্য প্রায় ৫০ জন সংবাদকর্মী ঢাকা থেকে আসছেন। পাশাপাশি বিদেশি সাংবাদিকরাও উপস্থিত থাকবেন।

রূপপুরের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, এরই মধ্যে প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ৭৫ ভাগ ভৌত-অবকাঠামো কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় ইউনিটের কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেওয়ায় এখন রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপন করা হচ্ছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশের চিরদিনের বন্ধু। দ্বিতীয় রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের মাধ্যমে বিশ্ব সভ্যতায় অনন্য অবস্থানে উন্নীত হবে বাংলাদেশ। মূলত, রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সহযোগিতা দিচ্ছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা আণবিক শক্তি করপোরেশন রসাটম। চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিটে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। যা নির্মাণের জন্য প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ ধরা হয়েছে।

এর আগে গত আগস্ট মাসে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় রিঅ্যাক্টর বা চুল্লিপত্র দেশে পৌঁছে। যার সঙ্গে নিয়ে আসা হয় চারটি স্টিম জেনারেটর। গত ১২ আগস্ট প্রকল্পের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রোসাটম (রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেই তথ্য জানানো হয়েছে।

তারও আগে গত বছরের অক্টোবরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের রিঅ্যাক্টর ভেসেল এবং স্টিম জেনারেটর বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। চলতি বছরেই নকশা অনুযায়ী রিঅ্যাক্টর ভেসেল স্থাপনের কথা বলা হয়েছিল। তাছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রোসাটমের প্রকৌশল শাখার নকশা অনুযায়ী নির্মিত হচ্ছে।

মূলত, রিঅ্যাক্টর প্ল্যান্ট প্রস্তুতি অত্যন্ত উচ্চ প্রযুক্তির একটি কাজ। যার দক্ষতা বিশ্বে অল্প কয়েকটি দেশের রয়েছে। জেএসসি এইম টেকনোলজি রাশিয়ার একমাত্র কোম্পনি, যারা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্টিম জেনারেটিং প্লান্টের সম্পূর্ণ অংশ তৈরি করে। অ্যাটোমম্যাস বছরে সর্বোচ্চ চার সেট যন্ত্রাংশ প্রস্তুত করতে পারে।

প্রসঙ্গত, পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক চুল্লির জন্য ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর কংক্রিটের মূল স্থাপনা নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের বছর জুলাইয়ে দ্বিতীয় চুল্লির নির্মাণকাজ শুরু হয়। কাজ শুরুর ৬৮ মাসের মধ্যে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল স্থাপনা নির্মাণের কথা রয়েছে রাশিয়ার কোম্পানি অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের।

শেয়ার বাটন