Sunday, May 19সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

কালীগঞ্জে মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ থেকে: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কাটুনিয়া সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদরাসায় সভাপতি, সুপারের পরস্পর জোগসাযোগে ৩ টি পদে ৩৬ লক্ষ টাকার পাতানো নিয়োগ বাণিজ্য সম্পন্ন করার অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১২ টার সময় কার্টুনিয়া সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় পাতানো নিয়োগ পরীক্ষায় কাটুনিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের পুত্র পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে শেরাফুল ইসলাম, হাবিবুর রহমানের পুত্র নিরাপত্তা কর্মী পদে ইকবাল হাসানএবং একই গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান এর স্ত্রী সুমাইয়া পারভীনকে আয়া পদে নিয়োগের যাবতীয় পরীক্ষার কার্যক্রম সম্পন্ন করে নিয়োগ দেওয়া হয়।

পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর নিরাপত্তা কর্মী, পরিচ্ছন্ন কর্মী এবং আয়া পদে মোট ২৪ জন প্রার্থী আবেদন জমা দেন। এরমধ্যে নিরাপত্তা কর্মী পদে ৯ জন, পরিছন্নতা কর্মী পদে ৮ জন এবং আয়া পদে ৭ জন আবেদন করে। পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে বন্দিপুর গ্রামের আসাদুজ্জামান, কাঠুনিয়া গ্রামের শেরাফুল, নাসিরুল, সিরাজুল ইসলাম, শামীম হোসেন, শ্যামনগর থানার বংশীপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন, যাদবপুর গ্রামের মাসুম বিল্লাহ, মানিকপুর গ্রামের খাইরুল বাশার, আবেদন করলেও একমাত্র শামীম বাদে সবাই পরীক্ষার অংশগ্রহণ করে। নিরাপত্তা কর্মী পদে সুবর্ণা গাছি গ্রামের হাসান হাবিব, গোয়ালপাতা গ্রামের আনিসুর রহমান, দুলাবালা গ্রামের শরিফুল ইসলাম, সোরা গ্রামের আসমাইন হুসনা, ফুলবাড়ী গ্রামের হাফিজুর রহমান, মানিকপুর গ্রামের হাবিবুল, কাটুনিয়া গ্রামের আলমগীর হোসেন, ইকবাল হাসান, চক পরানপুর গ্রামের আব্দুল করিম। এরমধ্যে আনোয়ার হোসেন বাদে বাকি ৮ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। আয়া পদে পীরগাজন গ্রামের রিপা খাতুন, কাটুনিয়া গ্রামের সুমাইয়া পারভিন, কোহিনুর, মারুফা, ফরিদা, মারুফা, ফারজানা আবেদন করলেও ফারজানা, ফরিদা, মারুফা বাদে বাকি ৪ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পরিচ্ছন্ন কর্মী দূলা বালা গ্রামেরশরিফুল ইসলাম, হাসান হাবিব, খায়রুল বাশার, হাবিবুল বাশার সাংবাদিকদের জানান তাদের প্রত্যেকের নিকট থেকে চাকুরী দেওয়ার নাম করে টাকা নিলেও মোটা অংকের টাকায় অন্যজনের পাশ করিয়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এখানে প্রত্যেক প্রার্থীর নিকট থেকে গোপনে নাটকীয়ভাবে টাকা নিয়ে পাতানো নিয়োগ পরীক্ষা করা হয়েছে। এছাড়াও বসন্তপুর গ্রামের মাওলানা সালাউদ্দিন নামে এক প্রার্থী জানান আমার নিকট থেকে নিয়োগের নাম করে ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিলেও আমার দরখাস্ত জমা করেনি এবং টাকা ফেরত দেয়নি। পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে আমার নিয়োগ দেওয়ার কথা ছিল। নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা হলো মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ফেরদৌসী বেগম অত্র মাদ্রাসার সভাপতি সোহেল রানা, মাদ্রাসার সুপার আফতাবুজ্জামান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাকি বিল্লাহ এবং শিক্ষক প্রতিনিধি সহকারী শিক্ষক আবুল বাশার। পরিকল্পনামাফিক মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি অর্থাৎ ডিজি প্রতিনিধিকে ৩ টি নিয়োগের জন্য ৬ লক্ষ টাকা দফারফা করে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে মাদ্রাসার সভাপতি এবং অধ্যক্ষ মিলে দিনক্ষণ ঠিক করে অতি গোপনে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ডিজি প্রতিনিধি অত্র মাদ্রাসায় এসে পাতানো নির্বাচনের কার্যক্রম সম্পূর্ণ করে চলে যান বলেভুক্তভোগীরা জানান। শনিবার বেলা ১২ টায় অত্র মাদ্রাসায় গেলে দেখা যায় মাদ্রাসার গেটে তালা দেওয়া পরে সাংবাদিক পরিচয়ে খুলে দিলে সেখানে দেখা যায় ২টি রুমে পরীক্ষা চলিতেছে। এ ব্যাপারে মাদ্রাসা বোর্ডের প্রতিনিধি ফেরদৌসী বেগমের নিকট জানতে চাইলে তিনি সঠিকভাবে পরীক্ষা হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের জানান। কোন ধরনের নিয়োগ বাণিজ্যর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। এ প্রসঙ্গে অফিস রুমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাকি বিল্লাহ, মাদ্রাসার সভাপতি সোহেল রানা এবং অধ্যক্ষ আফতাবুজ্জামান এর নিকট নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয় জানতে চাইলে উনারা অস্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান স্বচ্ছ এবং ফেয়ার ভাবে পরীক্ষা নিয়ে উৎকোচবিহীন নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে। যে পাশ করবে তাকেই নিয়োগ দেয়া হবে। একটি অপপ্রচার কারি প্রতিপক্ষ গ্রুপ সব সময় অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বলে সাংবাদিকদের জানান।

শেয়ার বাটন