Monday, April 29সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

সাতক্ষীরা পৌর কাউন্সিলর নান্টা গ্রেফতার, বেরিয়ে এলো চমকপ্রদ তথ্য!

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আইনুল ইসলাম নান্টাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) গভীর রাতে পুরাতন সাতক্ষীরার বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, একটি চাঁদাবাজির মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে, চাঁদাবাজির মামলার এজাহার বিশ্লেষণ ও অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে বেশ চমকপ্রদ তথ্য।
সূত্রের দাবি, বিবাদ মীমাংসার উদ্যোগ নিয়ে এবার সেই ইমাদুল ইসলামের রোষানলে পড়েছেন সাতক্ষীরা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নান্টা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ভবন নির্মাণে পৌর আইন লঙ্ঘনের প্রতিবাদ করায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিকার চেয়ে সম্প্রতি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন পৌরসভার রাজার বাগান পূর্বপাড়া গ্রামবাসী।

এই মানববন্ধনের দু’একদিন পরেই ইমাদুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে পৌর কাউন্সিলর নান্টার সঙ্গে বিষয়টি মীমাংসার জন্য যোগাযোগ করা হয়। ইমাদুলের পরিবারের ইতিবাচক সাড়া পেয়ে পৌর কাউন্সিলর নান্টা দু’পক্ষকে নিয়ে শালিসে বসেন। শালিসে স্থানীয় গণ্যমান্য একাধিক ব্যক্তি ও গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন এবং সেখানে দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ মীমাংসা করে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) রাতে পৌর কাউন্সিলর নান্টা পৌরসভার প্যাডে ওই শালিসনামা লিখে দ্বিতীয় পক্ষের স্বাক্ষর করিয়ে প্রথম পক্ষ ইমাদুলের কাছে তার ফার্মেসিতে নিয়ে যান। এ সময় ইমাদুল শালিসনামায় স্বাক্ষর করবেন না মর্মে হাঁকিয়ে দেন এবং অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে ক্ষমতা থাকলে কিছু করে নিতে বলেন। এ সময় জনসম্মুখে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে অপমান করায় পৌর কাউন্সিলর নান্টা ক্ষেপে গিয়ে ইমাদুলের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন।

মামলা সম্পর্কে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিশ্বজিৎ অধিকারী জানান, পুরাতন সাতক্ষীরার হাটখোলা মোড়ে ইমাদুলের ওষুধের ফার্মেসিতে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে নান্টা। চাঁদা না পেয়ে মঙ্গলবার রাতে ফার্মেসিতে হামলা চালিয়ে ইমাদুলকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে নান্টাসহ তার ক্যাডার বাহিনী। রাতেই ইমাদুলের ছেলে অহিদুজ্জামান নান্টাসহ সাত জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। সেই রাতেই নান্টাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অপরদিকে, বিবাদের দ্বিতীয়পক্ষ ও রাজার বাগান পূর্বপাড়ার শফিকুল ইসলাম বলেন, পৌর আইন লঙ্ঘন ও আমাদের জমির উপরে ছাদের কার্নিশ বাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে বাধা দেওয়ায় ইমাদুল সরদার অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির হুমকি দিয়ে আসছিল। আমরা উপায়ান্তর না পেয়ে সাতক্ষীরা পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পৌরসভা তাদের নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বলে। কিন্তু সে নির্দেশনাও না মেনে কাজ অব্যাহত রাখে। স্থানীয় এলাকাবাসী এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে ইমাদুল একটি মিথ্যা নাটক সাজিয়ে সদর থানায় আমার বাবা এবং আমাকেসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় পুলিশ আমাকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি আসলে ইমাদুল আবারো মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানিসহ বিভিন্ন হুমকি প্রদর্শন করতে থাকে। এমনকি বার বার আমারসহ গ্রামবাসীর বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে হয়রানি করতো। মামলার আগে পুরাতন সাতক্ষীরা পুলিশ ফাঁড়ি ও সদর থানা কর্তৃপক্ষ দু’পক্ষকে নিয়ে দু’বার বসার জন্য আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু তখন প্রতিবারই আমরা হাজির হলেও ইমাদুলের পক্ষ হাজির হতো না। পুলিশের আহ্বানে থানায় হাজির না হলেও পুলিশ অজ্ঞাত কারণে তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের এলাকায় এসে বার বার শাসিয়ে যেত।

এমন পরিস্থিতিতে আমরা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে পুরো ঘটনা তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করি ও মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে মানববন্ধন করি। এর দু’একদিন পরেই ইমাদুলের পরিবারের পক্ষ থেকে কাউন্সিলরের কাছে মীমাংসার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়। তাদের আহবানে সাড়া দিয়ে অনেক মানুষের উপস্থিতিতে শালিস হয়েছিল। মঙ্গলবার আমরা শালিস নামায় স্বাক্ষরও করেছি। রাতে কাউন্সিলর নান্টা ওদের দোকানে স্বাক্ষর করতে গেলে তারা স্বাক্ষর না করে উল্টো গালিগালাজ করে।

তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে পৌর কাউন্সিলর নান্টার মুক্তির দাবি জানান এবং ইমাদুলের হাত থেকে রেহাই পেতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

শেয়ার বাটন