Sunday, May 5সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

এবার কি চীনও সঙ্গ ছাড়ছে রাশিয়ার?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়া থেকে শিল্পজাত পণ্য ও কাঁচামাল আমদানি সীমিত করছে চীন। দেশটির বৃহত্তম দুই ব্যাংক আইসিবিসি ও ব্যাংক অব চায়না ইতোমধ্যে রুশ পণ্য ও কাঁচামাল আমদানিতে অর্থায়ন সীমিত করার উদ্যোগ নিয়েছে বলে শনিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

মূলত মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি এড়াতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। উইঘুর মুসলিমদের নিপীড়ন ও তাইওয়ান ইস্যুতে ইতোমধ্যে চীনের ওপর কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আইসিবিসি ও ব্যাংক অব চায়নার ওপরও প্রাথমিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

সূত্রের বরাত দিয়ে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান ইউক্রেন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এই দুই ব্যাংকের ওপর যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় ধাপের নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে— এমন আশঙ্কায় ভূগছে চীনের সরকার। যদি যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় ধাপের নিষেধাজ্ঞা জারি করে, সেক্ষেত্রে চীনের ডলারের মজুতের ওপর সরাসরি আঘাত আসবে।

তবে সূত্র জানিয়েছে, নিজেদের অর্থনীতিকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে সাময়িকভাবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে এই নীতি কার্যকর থাকবে না।

চীন ও রাশিয়া উভয়েই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ মিত্র চীন। ২০০১ সালে ২০ বছর মেয়াদী বন্ধুত্ব-সহযোগিতার একটি চুক্তি করেছিল এই দু’টি রাষ্ট্র এবং গত বছর ২৮ জুন এই চুক্তির মেয়াদ আরও বাড়ানোর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

তারপর ইউক্রেনে সীমান্তে রুশ সেনা উপস্থিতি নিয়ে যখন রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও তার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যখন রাশিয়ার তীব্র বিরোধ চলছে— সে সময়, গত ০৪ ফেব্রয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জোট বাঁধার ঘোষণা দেন দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান।

ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যে কূটনৈতিক সংকট, তা মূলত ন্যাটোকে ঘিরে। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ইউক্রেনের আবেদনের পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব দানা বাঁধতে থাকে। সম্প্রতি ইউক্রেনকে ন্যাটো সহযোগী দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর আরও ঘনীভূত হয় এই দ্বন্দ্ব।

ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের সরকারকে চাপে রাখতে গত দুই মাস ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় ২ লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল রাশিয়া; কিন্তু সেই কৌশল কাজে আসেনি। উপরন্তু, এই দুই মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা বলে এসেছে, রাশিয়া যে কোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাবে।

অবশেষে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে দেশটির পূর্বাঞ্চলে সেনা অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন ভ্লাদিমির পুতিন। তার ভাষণ সম্প্রচারের পরপরই রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায় এবং তড়িৎগতিতে ইউক্রেনের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা শুরু করে রুশ সেনাবাহিনী।

শেয়ার বাটন