Thursday, May 2সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

মারিউপোলের সড়কে পড়ে আছে শত শত মরদেহ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: টানা ১৫ দিন ধরে ইউক্রেনে অভিযান চালাচ্ছে রুশ সেনারা। এতে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় অবরুদ্ধ বন্দরনগরী মারিউপোলের সড়কে সড়কে পড়ে আছে শত শত মরদেহ। এমনটাই জানিয়েছেন মারিউপোলের ডেপুটি মেয়র সেরহি ওরলোভ।

তিনি বিবিসিকে বলেছেন, রাশিয়ার হামলায় শহরে ঠিক কত মানুষ মারা গেছেন, তা জানি না। তবে মারিউপোলের সড়কে সড়কে পড়ে আছে শত শত মরদেহ। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সড়ক থেকে এক হাজার ২০৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

ডেপুটি মেয়র সেরহি ওরলোভ বিবিসিকে আরও বলেছেন, ‌এসব কেবল মরদেহ; যা আমরা সড়ক থেকে উদ্ধার করেছি। তিনি বলেন, শহরের বাইরে কবরস্থানে পৌঁছানো সম্ভব না হওয়ায় ৪৭ জনকে গণকবর দেওয়া হয়েছে। তাদের সবার পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

ওরলোভ বলেন, শহর থেকে লোকজনকে সরানো অথবা সহায়তার আওতায় নেওয়া সম্ভব হয়নি। বুধবার অন্তত ১০০ মানুষ ব্যক্তিগত যানবাহনে করে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তারা যেতে পারেননি। রাশিয়ার সৈন্যরা শহরের তল্লাশি চৌকিতে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করায় তাদের গাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছে। রুশ সৈন্যরা সরাসরি তাদের গাড়িতে নয়, গাড়ির চারপাশে গুলি চালানো শুরু করায় তারা ফিরেছে।

বুধবার এক অভিও বার্তায় তিনি বলেছেন, সন্তানদের খাওয়ানোর জন্য অনেক পরিবারে খাবার ফুরিয়ে গেছে। কিছু এলাকায় পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, লোকজন খাবারের জন্য একে অপরের ওপর আক্রমণ করতে শুরু করেছে।

সাশা ভলকোভ বলেন, মারিউপোলে সবজির কালো বাজার তৈরি হয়েছে। তবে সেখানে মাংস অথবা এরকম অন্য কিছু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

ওষুধের সরবরাহ খুব দ্রুত কমে যাচ্ছে জানিয়ে রেডক্রসের এই কর্মকর্তা বলেছেন, শহরের ফার্মেসিগুলো চার থেকে পাঁচদিন আগে লুট করা হয়েছে। তবে কিছু হাসপাতাল এখন তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

সাশা ভলকোভ বলেন, ‘আর্দ্রতা এবং ঠান্ডার কারণে আমাদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। লোকজন বিভিন্ন ধরনের ওষুধের চাহিদা জানাচ্ছে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস ও ক্যানসার রোগীদের ওষুধ। কিন্তু শহরে এসব আর খুঁজে পাওয়ার কোনো উপায় নেই।

রাশিয়ার সামরিক অভিযানের ১৫ দিনে ইউক্রেনের বেশিরভাগ শহর একেবারে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। রাজধানী কিয়েভের প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা পালিয়েছেন বলে জানিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ। প্রতিবেশী এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ২০ লাখের বেশি ইউক্রেনীয় পালিয়ে গেছে বলে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবারও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তুরস্কের আনতালিয়া শহরে বসলেও সেখান থেকে যুদ্ধ অবসানের ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি আসেনি। এমনকি এই যুদ্ধ কবে নাগাদ শেষ হবে এবং এর পরিণতি কী হতে পারে, সে ব্যাপারে কোনো আভাস পাওয়া যায়নি।

তবে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা বলেছেন, শেষ পর্যন্ত আগ্রাসী শক্তি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করবে তার দেশ। রাশিয়ার কাছে কোনোভাবে আত্মসমর্পণ করা হবে না বলে হুংকার দিয়েছেন তিনি।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি।

শেয়ার বাটন