Friday, May 3সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

প্রধানমন্ত্রীত্ব হারালেন ইমরান খান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিরোধী দলগুলোর আনা অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারালেন ইমরান খান। তাঁর ক্ষমতাচ্যুতির মধ্য দিয়ে দেশটির নির্বাচিত একজন প্রধানমন্ত্রীও তাঁর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারলেন না। রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অথবা সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হন তারা।

স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে তাঁর বিরুদ্ধে আনা বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। ভোট শেষে ফল ঘোষণা করেন নতুন স্পিকারের দায়িত্ব নেওয়া সরদার আয়াজ সাদিক। তিনি জানান, ইমরান খানের বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ১৭৪টি। ৩৪২ আসনের জাতীয় পরিষদে প্রস্তাব পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ ভোট। ইমরান সরকারের পতনের খবরে পার্লামেন্টে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন বিরোধীরা।

আস্থা ভোটের আগে জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সার ও ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের আগে স্পিকার আসাদ কায়সার বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান‌কে ক্ষমতাচ্যুত করার বি‌দে‌শি ষড়য‌ন্ত্রের অংশ হ‌তে পার‌বেন না।

আসাদ কায়সার ব‌লেন, ‘আমাদের আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং আমাদের দেশের পক্ষে দাঁড়ানোর প্রয়োজনে, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমি স্পিকার পদে থাকতে পারব না, পদত্যাগ করব। যেহেতু এটি একটি জাতীয় দায়িত্ব এবং এটি সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত, আমি প্যানেল চেয়ারম্যান আয়াজ সাদিককে অধিবেশন পরিচালনা করতে বলব।’

পরে পার্লামেন্টে প্যানেল চেয়ারম্যান পিএমএল-এন নেতা ও সাবেক স্পিকার আয়াজ সাদিক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি প্রক্রিয়া শুরু করেন।

ভোটের ফল ঘোষণার পর স্পিকার শাহবাজ শরিফকে ভাষণ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। শাহবাজ বলেন, আল্লাহকে অশেষ ধন্যবাদ আজকের এ দিন দেখানোর জন্য।

আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। এ অনাস্থা প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এতে চরম রাজনৈতিক সংকটে পড়ে পাকিস্তান।

এ অবস্থায় স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। বিরোধীরাও আদালতের শরণাপন্ন হন। টানা পাঁচ দিনের শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন সর্বোচ্চ আদালত। একই সঙ্গে শনিবার অনাস্থা প্রস্তাবের সুরাহার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ইমরান খানের ভাগ্যনির্ধারণী এ অধিবেশন শুরু হয় স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায়। তবে অধিবেশন শুরুর কিছুক্ষণ পর দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তা মুলতবি করা হয়। এভাবে তিন দফা মুলতবি শেষে ইফতারের পর আবার অধিবেশন শুরু হয়। তখন জানানো হয়, রাত সাড়ে ৯টায় আবার অধিবেশন বসবে। অধিবেশন বসা নিয়ে নানা নাটকীয়তার পর মধ্যরাতেই শুরু হয় ইমরান খানের ওপর অনাস্থা ভোট।

শেয়ার বাটন