Monday, April 29সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত ঠেকাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু সুপার আবুল বাশারের

রফিকুল ইসলাম, দেবহাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধিঃ দেবহাটা ঘোনাপাড়া রহমানিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবুল বাশার দুর্নীতির শীর্ষে। কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত ঠেকাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু। উক্ত মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ সামসুর রহমান সহ কয়েক জন শিক্ষক ও সদস্যরা অভিযোগ করেন। মাদ্রাসা সুপার আবুল বাশার কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসা ও নিয়োগের নামে বহু টাকা বাণিজ্য সহ ঘোনাপাড়া-মহিলা মাদ্রাসার সব দাখিল পরীক্ষার্থীই ভূয়া দেখিয়ে এমপিও করা হয়েছে। তা শুধু কাগজ কলমে সীমাবদ্ধ রয়েছে।
তারই সত্যতা মিলেছে ২০২৪ সালের দাখিল পরীক্ষায়। ওই প্রতিষ্ঠানটিতে ১৮ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও প্রথম দিনে ৭ জন উপস্থিত্রে ছিল। ২য় ও ৩য় দিনের পরীক্ষায় ওই ১৮ জনের একজনও অংশ নেয়নি। পরে বিষয়টি খোঁজ নিলে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযুক্ত সুপার আবুল বাশার উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের জিয়াদ আলীর ছেলে। সুপার ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর। সুপার আবুল বাশার জালিয়াতি করে এবতেদায়ী পরীক্ষায় ৯ ভুয়া পরীক্ষার্থীসহ ধরা পড়ে। ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরে শতাধিক বাল্যবিয়ে দেওয়ায় অপরাধে ম্যারেজ রেজিষ্টার ও মাদ্রাসা সুপার আবুল বাশার গ্রেফতার হন। এছাড়া চেক জালিয়াতি মামলায় বেশ- কিছুদিন আগে দেবহাটা থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এর আগে সে ঘোনাপাড়া রহমানিয়া মহিলা দাখিল মাদরাসার সুপার আব্দুস সাত্তারকে কৌশলে সরিয়ে নিজে এই পদ দখল করেন। এরপর পুরাতন শিক্ষকদের পরিবর্তে নতুন শিক্ষক নিয়োগের নামে, ২০০৫ সালে ওই মাদ্রাসার সেক্রেটারি শওকত আলীর শীল ও সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্য প্রধান শিক্ষক হাচিনা (বানু) দেবহাটা জেলা নির্বাহী মুকাদ্দ আলীকদরের শীল ও সিগনেচার নকল করিয়া,আরো ২ কর্মকর্তার শীল ও সই নকল কোরিয়া কয়েকটি শিক্ষকের নিয়োগের নামে চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। জেডিসি ও দাখিল পরীক্ষায় ভূয়া পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসানো, শিক্ষক নিবন্ধনের জাল সনদ বিক্রিসহ অসংখ্য জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে আবুল বাশারের বিরুদ্ধে।
এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে স্থানীয় সামছুর রহমান বাদি হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জেলা প্রশাসক ও জেলা অফিসারের কার্যালয় বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি জানান, মাদ্রাসার সুপার এমপিও করার পূর্বে পুরাতন শিক্ষকদের বাদ দিয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করেছে। এরমধ্যে শুরুতে ১৯৯৭ সাল, ২০০৩ সাল, ২০০৫ সাল ও ২০০৯ সালে পর্যায়ক্রমে শিক্ষাবোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে শিক্ষক (মোকছেদুল আলম) আব্দুস সাত্তার, শিক্ষক নুরুল ইসলাম, সঞ্জয় সরদার, আব্দুর রহিম,ইয়াকুব আলী,হুসনেয়ারা খাতুন, অফিস সহকারী আকবর আলী খাঁন, দায়িত্ব পালন করাকালীন মাদ্রাসাটির সুপার মাওলানা আবুল বাশারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তিনি তাদেরকে বিভিন্ন প্রকারের হুমকি দিতে থাকে। সে খুব ধুরন্ধর হওয়ায় বার বার অপরাধ করেও অদৃশ্য শক্তির বলে পার পেয়ে যান।খবর পেয়ে সাংবাদিকরা ঐই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, মাদ্রাসার সুপার আবুল বাশারের দুর্নীতির কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেবহাটা পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন আমি দুর্নীতির কালোবাজারি সাথে থাকতে চাইনা আমি ওই মাদ্রাসার থেকে সভাপতি পদে। হতে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছি। এদিকে, মাদ্রাসার সুপার আবুল বাশারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মুটো ফোনে কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো আসাদুজ্জামান জানান,গত ২৯ ইং ফেব্রুয়ারি এলাকাবাসীর দায়ের করা ঘুষ, দুর্নীতি সহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া ও নানা বিধ দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত বিষয়টির সত্যতা পেতে। ও উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৫/৩ /২৪/ ইং বিষয়টি তিন বিশিষ্ট কমিটি করে, তদন্ত জন্য,দেবহাটা সহকারি কমিশনার (ভূমি) উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে খবর পেয়ে আলোচিত,মাদ্রাসাটির সুপার মাওলানা আবুল বাশার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কয়েকটি অফিসারের ( সিন সই)সহ বিভিন্ন ঘুষ, দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতা সহ নানা বিধ দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত ঠেকাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে মাদ্রাসাটির সুপার মাওলানা আবুল বাশার। আজও পর্যন্ত তার কোন তদন্ত কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় এলাকার অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিষয়টি তদন্ত-পূর্বক আইনানূগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।

শেয়ার বাটন