Friday, April 26সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠছে নিউ মার্কেট

নিজস্ব প্রতিবেদক: দিন যত যায় ততই ঈদ ঘনিয়ে আসছে। রাজধানীর মার্কেটগুলো এখন ঈদের আমেজে রূপ নিয়েছে। রোজার শুরুর দিকে ক্রেতা-গ্রাহকের উপস্থিতি কম থাকলেও এখন আস্তে আস্তে উপস্থিতি বাড়ছে। সাথে সাথে কেনা বেচাও আগের তুলনায় বাড়ছে। রাজধানীর নিউ মার্কেট ঘুরে দেখা গেলো ঈদ বাজার আবারও জমে উঠতে শুরু করেছে।

নিউ মার্কেট ব্যবসায়ীরা জানান, গত দুই বছর করোনায় ব্যবসা তেমন একটা হয়নি। এবছর আবার জমতে শুরু করেছে। তবে আগের যেকোন সময়ের মত আর ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।

তারা জনিয়েছেন, প্রতিবছর রোজার শুরু থেকেই গ্রামমুখী মানুষজন আস্তে আস্তে ঢাকা ছাড়তে শুরু করে। অন্যান্য বছর পুরো রমজান মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকে। তখন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা রমজানের শুরুতেই কেনাকাটা করে ঢাকা ছাড়তে শুরু করে। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। পুরোদমে চলছে স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির ক্লাস-পরীক্ষা। সুতরাং কেউই এই শ্রেণির কেউই এখনও মার্কেটমুখী হয়নি।

নিউ মার্কেটের প্রসাধনী ব্যবসায়ী আব্দুর রব বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২০ এপ্রিল বন্ধ হলে আসা করা যায় মার্কেটে ক্রেতা আরও বাড়বে।

এছাড়া তিনি জানান, করোনা মওসুমে অনেক মানুষ অনলাইন শপের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। এসব মানুষ শহরের রাস্তার জ্যাম আর গরম পরিবেশ পাড়ি দিয়ে মার্কেটে আসতে চায় না।

বিপণিবিতান ঘুরে দেখা যায়, শাড়ি, থ্রিপিস, শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, জুতা-স্যান্ডেল, কসমেটিকস, অর্নামেন্টস, দর্জিবাড়িসহ সব কিছুই পাওয়া যায় নিউ মার্কেটে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে এখানে তত ভিড় বাড়ছে তরুণীদের। পাশাপাশি ভিড় বাড়ছে তরুণদেরও। নিউ মার্কেটের ফুটপাতেও ভালোই বিকিকিনি হচ্ছে। ছেলেদের শার্ট বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, জিন্স প্যান্ট ৩৫০ থেকে ৭৫০, টি-শার্ট ২৫০ থেকে ৪০০, মেয়েদের থ্রিপিস ৪৫০ থেকে এক হাজার ২০০, শাড়ি ৪৫০ থেকে এক হাজার, শিশুদের থ্রি-কোয়ার্টার জিন্স প্যান্ট ৩০০, গেঞ্জির সেট ২০০ থেকে ৫০০, ফ্রক ও টপস ২৫০ থেকে ৫০০, শাড়ি ৫০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা। বড় দোকানে সামনে বসা বাচ্চাদের এক পোশাক বিক্রেতা জানান, বিক্রি দিন দিন বাড়ছে। ক্রেতা-দর্শনার্থীও বাড়ছে।

এবারের ঈদে মেয়েদের নতুন কালেকশনের মধ্যে রয়েছে পুষ্পা, গারারা, সারারা, বাবরি গাউন, বাবরি ফ্রক, ফ্লোট টাচ্ ইত্যাদি। বারবি গাউন, সারারা তিন হাজার থেকে ছয় হাজার, বাবরি ফ্রক এক হাজার পাঁচশত থেকে তিন হাজার পর্যন্ত দাম ধরা হয়েছে।

মল্লিকা বস্ত্র বিতানের সত্ত্বাধিকারী জুয়েল মিয়া জানান, এবার বিক্রি ভালোই চলছে। তবে আগের যে কোন সময়ের চেয়ে ভালো।

ফ্যাশন টার্গেটের প্রোপাইটর মো. জিয়াউর রহমান বলেন, সব কিছুর দাম বাড়ার সাথে সাথে পোশাকের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ধীরে ধীরে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে।

মাতুয়াইল থেকে সাদ্দাম হোসেন এসেছেন ঈদের কেনাকাটা করার জন্য। তিনি বলেন, জামা কাপড়ের দাম আগের চেয়ে এবার বেশি। ব্যবসায়ীরা মনে করেন রোজার শেষ দিকে চাকরীজীবীরা বেতন-ভাতা পাওয়ার পর ব্যবসা আরও জমে উঠবে। এছাড়া এখনও মানুষ ঢাকা ছাড়েনি। ঢাকা ছাড়ার আগেই আশা করি তারা তাদের পছন্দের পোশাক ক্রয় করবেন।

নিউ মার্কেটের বিপনী ছাড়াও তার আশপাশের অস্থায়ী ছোট দোকানগুলোতে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সেখানে তুলনামূলক কম দামে পোশাক পাওয়া যায়। যদিও ফুটপাতেও আগের চেয়ে দাম বেশি। দ্রব্যমূল্য বাড়ায় অনেক মানুষ এবার ফুটপাতের দিকে ঝুঁকছে। নিউ মার্কেটের বাচ্চাদের, ছেলে-মেয়েদের ও বয়স্কদের পোশাকের প্রায় সব পাওয়া যায়। এছাড়া জুতা, প্রসাধনী, অর্নমেন্টসহ গৃহস্থলির সব ধরনে পন্যর জন্য প্রসিদ্ধ। এ মার্কেট মধ্যবিত্তের কাছে জনপ্রিয়। ঢাকার মানুষরা ধীর গতিতে কেনাকাটা করছে। তবে ঢাকার বাইরের ক্রেতারা ইতোমধ্যে পছন্দের নতুন পোশাক কিনেছেন।

শেয়ার বাটন