Monday, September 1সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

বিনম্র শ্রদ্ধা হে জাতির পিতা

সীমান্ত ডেস্ক: তিনি ছিলেন বাঙালির প্রাণের স্পন্দন। তাঁর সব চিন্তা, চেতনা, স্বপ্ন ও দর্শনে বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতিকে ধারণ করেছিলেন। চলনে-বলনে, কথা-বার্তায়, আচার-আচরণে, পোশাকে-আশাকে, বিচার-বিবেচনায়, আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন বিশুদ্ধ বাঙালি। দেশের মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তিই ছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান ও সাধনা। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার জন্য তিনি এ বাংলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন। তাঁর রাজনৈতিক জীবন ১৯৩৯ সালে শুরু হলেও ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজন-পরবর্তী পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে তিনি একজন প্রখ্যাত তরুণ ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮-এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়ে জনগণকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করেন। বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে আত্মত্যাগের কথা বারবার এসেছে। বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘বাংলার ছেলেরা, বাংলার মায়েরা, বাংলার কৃষক, বাংলার শ্রমিক, বাংলার বুদ্ধিজীবী যেভাবে সংগ্রাম করেছে, আমি কারাগারে বন্দি ছিলাম, ফাঁসি কাষ্ঠে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম আমার বাঙালিকে দাবায় রাখতে পারবে না। নয় মাসের দীর্ঘ লড়াই, লাখো প্রাণের রক্ত, মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। তাঁর নেতৃত্বে পেয়েছি আমরা বাংলাদেশ, লাল সবুজ পতাকা। তাঁর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা বির্নিমাণ। কিন্তু ১৯৭৫-ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাত তার স্বপ্নকে নস্যাৎ করে দিয়েছিল। ১৯৭৫-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে স্বৈরশাসক ও স্বাধীনতাবিরোধীদের দ্বারা এ দেশ শাসিত হওয়ায় সেই সময় বাংলাদেশের অগ্রগতি তো দূরের কথা, তারা সমগ্র বাংলাদেশকে ভয়াবহ সংকট ও ঝুঁকির মধ্যে নিমজ্জিত করে রেখেছিল। ১৯৯৬ সালে জাতির পিতার স্বপ্নের সেই সোনার বাংলাদেশ গড়তেই তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের হাল ধরেছেন শক্ত হাতে।

সৈয়দ শামসুল হক বলেছিলেন, ‘মানুষের ইতিহাসকে দুই-চার বছরের নিরিখে বিচার কোরো না। সামগ্রিকভাবে মানুষের ইতিহাস হলো এগিয়ে যাওয়ার ইতিহাস।’ বাংলাদেশের ইতিহাসও এগিয়ে যাওয়ার ইতিহাস। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ সময়টুকু উদ?যাপিত হবে মুজিববর্ষ হিসেবে। বঙ্গবন্ধুর সেই সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে আমরা কতদূর এগিয়েছি তা তার জন্মশতবার্ষিকী তথা মুজিববর্ষে সঠিকভাবে নিরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা জরুরি। তাহলে আমরা আত্মবিশ্লেষণধর্মী, ক্রিয়াশীল, চিন্তাশীল ও অগ্রগামী জাতি হিসেবে আমাদের স্বকীয়তার প্রকাশ ও প্রসার ঘটিয়ে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে আত্মপ্রকাশ করতে পারব।

বঙ্গবন্ধু এক আদর্শের নাম। আদর্শের মৃত্যু নেই। তিনি মৃত্যুঞ্জয়ী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, দর্শন, চলার পথ ও স্বপ্নই হবে বাংলাদেশের চালিকাশক্তি। আজ এই দিনে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার-পরিজনসহ ১৫ আগস্টে নিহত সবার স্মৃতির প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জানাই, সবার আত্মার শান্তি কামনা করি।

শেয়ার বাটন