Friday, April 26সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

৫শ’র বেশি মোটরসাইকেল চোর চক্র গ্রেফতার-প্রেসব্রিফিংয়ে ডিবি প্রধান

হাসানুজ্জামান সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি: ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫০০ এর বেশি মোটরসাইকেল চোর চক্রের পাচঁজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো-নুর মোহাম্মদ, মোঃ রবিন, মোঃ আবু বকর সিদ্দিক ওরফে সজল, মোঃ মনির হোসেন এবং মোঃ আকাশ। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ১৩টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

গত মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট ২০২২) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে ডিবি ওয়ারী বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম।

গতকাল বুধবার (১৭ আগস্ট ২০২২) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার।

তিনি বলেন, গত ২ এপ্রিল ২০২২ টিকাটুলির সালাউদ্দিন ভবনের মার্কেটের পার্কিং প্লেস থেকে মোঃ সাদেক হোসেনের একটি জিক্সার মোটরসাইকেল চুরি হয়। ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে ওয়ারী থানায় একটি মামলা রুজু হয়। পরবর্তী সময়ে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশকে। এছাড়া গেন্ডারিয়া থানার আরেকটি মোটরসাইকেল চুরির মামলাও তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবি পুলিশ।

গোয়েন্দা প্রধান বলেন, মামলা দুটি ডিবির সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে কাজ শুরু করে একটি চৌকস টিম। প্রথমে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে নুর মোহাম্মদ ও মোঃ রবিন নামের দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের অপরাধের কৌশল সম্পর্কে ডিবি প্রধান বলেন, এ চক্রের নুর মোহাম্মদ ও রবিন মোটর সাইকেল চুরি করার জন্য টার্গেটকৃত মোটর সাইকেলের আশপাশে গিয়ে ঘোরাঘুরি করে, চা কিংবা সিগারেট খায়। পরবর্তী সময়ে সুযোগ বুঝে তাদের নিজেদের তৈরি করা ‘মাস্টার কি’ দিয়ে র্স্টাট করে মোটর সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর চুরি করা সেই মোটর সাইকেলটি তাদের অপর সহযোগী আবু বকর সিদ্দিক, মনির হোসেন এবং মোঃ আকাশের মাধ্যমে পোস্তাগোলা কিংবা বাবুবাজার ব্রিজ পার হয়ে দোহার এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে বর্ডার ক্রস করা গাড়ি বলে কমদামে সেগুলো বিক্রি করে থাকে। এরা এই ‘মাস্টার কি’ টি এমনভাবে তৈরি করে যা দিয়ে যেকোন মোটরসাইকেল খুব সহজেই র্স্টাট করতে পারে।

তিনি বলেন, এ চক্রটি মূলত পুরান ঢাকা এলাকায় মোটর সাইকেল চুরি করে থাকে। এদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এছাড়া যারা চুরি করে এবং কম টাকায় এসব চোরাই মোটর সাইকেল ক্রয় করে ব্যবহার করেন তারাও একই অপরাধে অপরাধী হবেন বলে তিনি যোগ করেন। কারোর মোটরসাইকেল চুরি হলে সংশ্লিষ্ট থানায় জানিয়ে ডিবি পুলিশকে অবগত করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

তিনি বলেন, পুলিশের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
উদ্ধার হওয়া ১৩টি মোটর সাইকেলের মধ্যে ইতোমধ্যে ৫ জনের মালিকানা নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদের মধ্যে ঢাকার মান্নান হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষক ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এই প্রতিবেদককে বলছিলেন, কাল (মঙ্গলবার) বিকেলে যখন আমি ডিবি পুলিশ থেকে মোটর সাইকেল উদ্ধার সংক্রান্তে ফোন পাই, আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছিলো না, যে ডিবি পুলিশ আমার চুরি হওয়া মোটর সাইকেলটি আবার উদ্ধার করতে পেরেছে।

কিন্তু আজ তিনি মিডিয়া সেন্টারে এসে অনেক কষ্টের টাকায় কেনা সাধের মোটর সাইকেলটি দেখে আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন এবং পুলিশকে সাধুবাদ জানান।

শেয়ার বাটন