Friday, April 26সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

স্ত্রীর কথা মতো ছেলে থেকে মেয়ে হয়ে বিপাকে স্বামী

সীমান্ত ডেস্ক: সব সময় স্ত্রীর খেয়াল রাখতেন সুশীল (নাম পরিবর্তিত)। স্ত্রী কী খাবেন, কখন অফিস থেকে আসবেন, অফিসে টিফিন কী নেবেন ইত্যাদি ইত্যাদি। স্ত্রী মানসীও (নাম পরিবর্তিত) এটা উপভোগ করতেন যে, এক জন মহিলার মতো স্বামী তার সব দিক খেয়াল রাখছেন।

সুশীল-মানসী কলেজের সহপাঠী ছিলেন। ভালোবেসে দুজনে বিয়ে করেন। কর্মসূত্রে দুজনে থাকতে শুরু করেন ভারতের দিল্লিতে। বেশ ভালোই চলছিল দুজনের সংসার। কিন্তু মজার ছলে নেওয়া একটা সিদ্ধান্তই স্বামী-স্ত্রীর জীবনে ঝড় বয়ে এনেছে।

অফিসে এক নারী কর্মীর সঙ্গে পরিচয় হয় সুশীলের। এক দিন হঠাৎ তিনি জানতে পারেন, ওই নারী আগে পুরুষ ছিলেন। লিঙ্গ বদলে নারী হয়েছেন। খুব অবাক হয়ে যান সুশীল। যে সহকর্মীকে এতদিন নারী বলে জানতেন, আদতে তিনি পুরুষ ছিলেন! বাড়ি ফিরে স্ত্রী মানসীকে ঘটনা জানান সুশীল। এরপর সুশীল ওই সহকর্মীকে বাড়িতেও নিয়ে যান। তাদের তিনজনের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

একদিন মানসী মজার ছলে সুশীলকে বলেন, ‘তুমি তো মেয়েদের মতো আমার এত খেয়াল রাখছো। তুমি সত্যিই একজন মেয়ে হয়ে গেলে কেমন হয়? আমার মনে হয়, তুমি লিঙ্গ পরিবর্তন করে ফেলো। দেখো তো, এ রকম করলে কেমন অনুভূতি হয়?’

মজার ছলে বলা স্ত্রীর এই কথাই পালনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সুশীল। লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুতি নেন। সুশীলকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান মানসীই। কোনো কাউন্সেলিং ছাড়াই চিকিৎসক সুশীলের লিঙ্গ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এক বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এই বিষয়টি স্বামী-স্ত্রী দুজনেই উপভোগ করছিলেন।

কিন্তু এর পরিণতি যে চরম হতে পারে, তা দুজনের কেউই তত গুরুত্ব দেননি। যত সময় যাচ্ছিল সুশীলের দেহে নানা রকম পরিবর্তন আসতে শুরু করে। এই ঘটনা যখন ঘটছে, সুশীলকে নিজের পোশাক পরিয়ে বাজারে, দোকানে নিয়ে যাওয়া শুরু করেন মানসী। পরিচিতদের কাছে সুশীলকে নিজের বান্ধবী বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন। কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাননি যে, ওই নারীই সুশীল।

ভোপালে থাকা সুশীল এবং মানসীর পরিবার দুজনকে একসঙ্গে বাড়িতে যেতে বলতেন। কিন্তু কোনো না কোনো বাহানায় তারা বিষয়টি কাটিয়ে দিতেন। এভাবে দেড় বছর তারা এড়িয়ে যান।

একদিন হঠাৎ সুশীলের বাবা-মা দিল্লিতে তাদের বাড়ি গিয়ে হাজির হন। সুশীলের এমন রূপ দেখে মা-বাবার জ্ঞান হারানোর মতো অবস্থা হয়। কীভাবে তাদের ছেলে এমন হয়ে গেল, কেনই বা হলো তার কোনো সদুত্তর পাননি। তারা এই ঘটনার জন্য পুত্রবধূ মানসীকে দায়ী করেন।

শ্বশুর-শাশুড়ির অভিযোগে রাগ করে বাপেরবাড়ি চলে যান মানসী এবং পাল্টা দাবি করেন, স্বামীর দায়িত্ব পালন করার ক্ষমতা নেই সুশীলের। তিনি সুশীলের সঙ্গে সংসার করতে চান না, বিবাহ বিচ্ছেদ চান। বিষয়টি নিয়ে সুশীলের বাবা-মা মামলা করেছেন। অদ্ভুত এই মামলা নিয়ে এখন জোর চর্চা চলছে ভোপালে।

শেয়ার বাটন