Friday, April 26সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

মেহেরপুরে অপরুপ সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে সূর্যমুখী

সাইফুজ্জামান, মেহেরপুর থেকেঃ এ যেন সূর্যমুখী ফুলের রাজ্য।যতদূর চোখ যায় ততোদূর হলুদ রঙের ঝলকানি দেখা যায়। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সবুজের মাঝে হলুদের সমাহার।সূর্যমুখী ফুল যেন সূর্যের দিকে মুখ করে তাকিয়ে আছে। এ অপরুপ সৌন্দর্যের দৃশ্য চোখে পড়বে মেহেরপুরের আমঝুপি বি এ ডি সি (বীজ খামারে)।
এমন সৌন্দর্য দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছেন সূর্যমুখী বাগানে।সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সব বয়সী মানুষেরা ছুটে আসছেন এ বাগানে। এখানে আসা দর্শনার্থীরা নির্মল বাতাস আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে বাগানের ভিডিও তাইতো বাগানের খবর ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। এতে করে জেলার ও জেলার বাইরে থেকে নানা বয়সী মানুষ ভিড় করছে এ সূর্যমুখী বাগানে। ফলে প্রতিদিন হাজারো মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে বি এ ডি সি এ সূর্যমুখীর বাগানে। চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থেকে মাহমুদুল ইসলাম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছেন এ সূর্য বাগানে।তিনি বলেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছি খুব নিকট থেকে ফুল দেখতে।
গাংনীর বামুন্দী থেকে ফাহিম আহমেদ এসেছেন ক্যামেরা নিয়ে বন্ধুদের সাথে ছবি তুলতে।তিনি বলেন,ফেসবুকে এ বাগানের ভিডিও দেখেই সামনাসামনি একসাথে এত ফুল দেখতে ও ছবি তুলতে বন্ধুদের সাথে করে নিয়ে চলে এসেছি। খুব ভালো লাগছে একসাথে এত ফুল দেখতে পেয়ে। সপ্তাহের অন্যান্য দিনের চেয়ে শুক্রবার ও শনিবার সূর্যমুখী ফুলের বাগান দেখতে লোক সমাগম হয় বেশি,ফলে অনেক সময় (বি এ ডি সি) কর্তৃক নিযুক্ত লোকদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় বাগান সামাল দিতে। অনেকেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসে বাগানে প্রবেশ করে ফুল ছিঁড়ে ফেলে এবং গাছ নষ্ট করে।
স্হানীয় সূত্র থেকে জানা যায়,কয়েকবছর ধরে শীতকালীন এ সময়ে আমঝুপি বি এ ডি সি খামারে চাষ হয়ে আসছে সূর্যমুখী ফুলের। সূর্যমুখী চাষের আবাদ কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে বি এ ডি সি।
সূর্যমুখী তৈলের চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখেই মেহেরপুরে বাড়ছে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ। আমঝুপি বি এ ডি সি কর্তৃক জানা যায়, চলতি বছরে ৪ একর জায়গা জুড়ে বারী (৩) সূর্যমুখী আবাদ করা হয়েছে। এখান থেকে উৎপাদিত বীজ কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বি এ ডি সি) উপ সহকারী পরিচালক মোঃআবু তাহের সরদার সীমান্ত বার্তাকে জানান,সূর্যমুখী তৈলের পুষ্টিগুন অনেক বেশি। ক্যান্সার, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সূর্যমুখী তৈলের রয়েছে নানা পুষ্টিগুন এবং ভৈজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে বাড়ানো হচ্ছে সূর্যমুখী চাষ।সারাদেশে কৃষকদের মাঝে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ ছড়িয়ে দিতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি।সূর্যমুখীর বীজ কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা হচ্ছে তা ছাড়া সূর্যমুখী আবাদে নানা রকম কারিগরি সহায়তাও দেয়া হচ্ছে। সূর্যমুখী অল্প পরিশ্রমে চাষ করা যায় এবং তুলনামূলক গাছের রোগবালাই কম। এ ফুলের বাগান তৈরীতে খরচ হয় বিঘা প্রতি পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা।এ ফুলের বীজ থেকে তৈল তৈরী হয় এতে থাকা লিনোলিক এসিড হৃৎপিণ্ডকে ভালো রাখে। সূর্যমুখী ফুলের বাগান আরও বৃদ্ধি পায়, সে জন্য কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

শেয়ার বাটন