

বিউটি রাণী, নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার আলীকদমে অবস্থিত নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরা মিরিঞ্জা রেঞ্জের পাহাড় মারায়ন তং জাদি। এর উচ্চতা প্রায় ১৬৮০ ফিট। স্থানীয়দের কাছে এই পাহাড় মারায়ন তং জাদি/মারায়ন ডং/মারাইথং পাহাড় নামে পরিচিত।
এখান থেকে যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু পাহাড় আর পাহাড়। সে সবের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে জনবসতি। নিচে এঁকেবেঁকে বয়ে চলেছে মাতামুহুরী নদী।
এখান থেকে যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু পাহাড় আর পাহাড়। সে সবের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে জনবসতি। নিচে এঁকেবেঁকে বয়ে চলেছে মাতামুহুরী নদী।
তার দুই কূলে দেখা যায় ফসলের ক্ষেত। পাহাড়ের চূড়ায় পছন্দকারী পর্যটকরা চলে আসেন বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলায় অবস্থিত মারায়ন তং এই জাদি পাহাড়ে।
এই পাহাড়ে সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠতে হাঁটতে হয় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পাহাড়ি রাস্তা। নিচ থেকে একদম চূড়া পর্যন্ত পুরোটাই খাড়া রাস্তা। বর্তমানে জাদিটি পূর্ণ সংস্কারের কাজ চলছে।
মারায়ন তং পাহাড়ে রয়েছে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস। এদের মধ্যে ত্রিপুরা, মারমা ও মুরুং অন্যতম। এই পাহাড়ের নিচে থাকে মারমারা আর পাহাড়ের ভাজে ভাজে রয়েছে মুরুংদের পাড়া।
পাহাড়ের একেবারে চূড়ায় একটি বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের উপাসনালয় রয়েছে। যার চারদিকে খোলা ও ওপরের দিকে চালা। এতে আছে বুদ্ধের এক বিশাল মূর্তি। এছাড়া পাহাড়ের ওপরের অংশটুকু সমতল। পার্বত্যভূমির দর্শনীয় স্থান হিসেবে জায়গাটি বেশ চমৎকার।
পাহাড়ের ঢালে ঢালে তাদের বাড়ি। মাটি থেকে সামান্য ওপরে এদের টংঘর। এসব ঘরের নিচে থাকে বিভিন্ন গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি, ছাগল ও শুকর। কখনো কখনো প্রয়োজনীয় জ্বালানি কাঠও স্তুপ করে রাখা হয়।
রাজশাহী থেকে আগত পর্যটক আরিফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার পরে যখন চূড়ায় উঠি সব কষ্ট নিমিষেই ভুলে যাই। প্রকৃতির রূপ যে এতো সুন্দর এইখানে না আসলে বুঝতে পারতাম না।
বিকেলে সূর্য যখন পাহাড়ের কোলে ঘুমিয়ে যাচ্ছিল, প্রকৃতিকে অনন্য একটা রূপের দেখা যায়। মনে হয় পাহাড় নিজের ছায়াতলে খুব সযত্নে আলতো করে সূর্যটাকে লুকিয়ে রেখে দিচ্ছে। বিকেলের স্নিগ্ধ আলো আর সন্ধ্যার রক্তিম আকাশের মিষ্টি আবহ পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থানরত সবাইকে গভীরভাবে আলিঙ্গন করে দেয়।
চারদিকে স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার সময়টাতে চূড়ায় থাকা সবাই খুব গভীরভাবে অনুভব করা যায়। খুব কাছ থেকে প্রকৃতির হিংস্রা রূপ দেখে আসা আমরাই আবার প্রকৃতির করুনা উপভোগ করছি।
আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, মারাইতং আলীকদমের পর্যটন সম্ভাবনাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য পর্যটক এসে ক্যাম্পিং করে এই সৌন্দর্য উপভোগ করছে। মারায়ন তং পাহাড়ে উঠা নামার সময় খুব সাবধানে চলাচল করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।