হাসানুজ্জামান সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি: গতকাল দুপুর ২ঘটিকার সময় ডিএমপি মিডিয়া সেলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক পিপিএম-সেবা জানান,ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তেজগাঁও থানার চাঞ্চল্যকর ফারুক হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও হত্যার ঘটনায় জড়িত ০৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। গত ২৫.০২.২৩ ইং তারিখ রাজধানীর তেজগাঁও থানাধীন পশ্চিম রাজাবাজার ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন মোল্লাবাড়ী বস্তি এলাকা হতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের নাম- ১। মোঃ সাদ্দাম হোসেন সাব্বির ওরফে সিটু সাব্বির ওরফে সাগর (২৩) ২। মোঃ রনি (২৬) এবং ৩। মোঃ বিজয় (৩৪)। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ০১টি ধারালো চাকু ও ১০টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৪.০২.২৩ খ্রি. দিবাগত রাত ১২.০০ টার কিছু সময় পর তেজগাঁও থানাধীন পানি ভবন সংলগ্ন ফুটপাতে পূর্ব পরিচিত রনির সাথে ভিকটিম মোঃ ফারুক হোসেন আড্ডা দিচ্ছিলেন। পূর্ব শত্রæতার জের ধরে ভিকটিম মোঃ ফারুক হোসেনকে গ্রেফতারকৃত রনি ও বিজয় কৌশলে বাসা থেকে বের করে নিয়ে আসে ও আড্ডার মাধ্যমে সময় ক্ষেপন করতে থাকে। আড্ডার একপর্যায়ে গ্রেফতারকৃত মূল অভিযুক্ত মোঃ সাদ্দাম হোসেন সাব্বির ওরফে সিটু সাব্বির ওরফে সাগর তাদের সাথে আড্ডায় যুক্ত হয়। গ্রেফতারকৃত মূল অভিযুক্ত মোঃ সাদ্দাম হোসেন সাব্বির ওরফে সিটু সাব্বির ওরফে সাগর ০১ বছর কারা ভোগের পর জামিনে এসে ০২ দিনে ১২টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন ছিনতাই করে। পরবর্তীতে ভিকটিম ও গ্রেফতারকৃতরা ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন বিক্রির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা প্রাপ্তির সম্ভাবনা উদ্যাপন করতে বারে গিয়ে মদ পান করতে চায়। গ্রেফতারকৃত মূল অভিযুক্ত মোঃ সাদ্দাম হোসেন সাব্বির ওরফে সিটু সাব্বির ওরফে সাগর বার থেকে মদ এনে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগির সময় ভিকটিম মোঃ ফারুক হোসেনের সাথে বাক-বিতন্ডা শুরু হয় এবং ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন বিক্রির বিষয়ে নিজেদের মধ্যে গালমন্দ হয়। পূর্ব শত্রæতার আক্রোশে গ্রেফতারকৃত মূল অভিযুক্ত মোঃ সাদ্দাম হোসেন সাব্বির ওরফে সিটু সাব্বির ওরফে সাগর নিজের কাছে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে ভিকটিম মোঃ ফারুক হোসেনের বাম পায়ের উরুতে আঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় ভিকটিম মোঃ ফারুক হোসেন ফুটপাতে পড়ে থাকে। রক্তাক্ত অবস্থায় ভিকটিম মোঃ ফারুক হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রাত ০২.০০ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাৎক্ষনিকভাবে তেজগাঁও থানার ০২টি আভিযানিক টিম ঘটনাস্থল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায়। সংবাদ পেয়ে ভিকটিম মোঃ ফারুক হোসেনের আত্মীয়-স্বজনরাও হাসপাতালে যান। সুরতহাল ও পোস্টমর্টেম শেষে ভিকটিমের লাশ তার স্বজনদের বুঝিয়ে দেয়া হয়। হত্যাকান্ডের বিষয়ে ভিকটিমের স্ত্রী ও আত্মীয়-স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও হত্যাকান্ডে সাম্ভব্য জড়িতদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তেজগাঁও থানার ০২টি আভিযানিক টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডে সাথে জড়িত মূল অভিযুক্ত ও অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতদের সাথে নিহত ভিকটিমের পূর্ব শত্রæতার আক্রোশের জের ধরে মূল অভিযুক্ত গ্রেফতারকৃত মোঃ সাদ্দাম হোসেন সাব্বির ওরফে সিটু সাব্বির ওরফে সাগর অন্যান্য সহযোগীদের যোগসাজসে হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটায়।
গ্রেফতারকৃত মোঃ সাদ্দাম হোসেন সাব্বির ওরফে সিটু সাব্বির ওরফে সাগর এর বিরুদ্ধে ডিএমপি’র তেজগাঁও থানা ও হাতিরঝিল থানায় অস্ত্র, দস্যুতা ও মাদক সংক্রান্তে ০৭টি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত মোঃ রনি এর বিরুদ্ধে ডিএমপি’র তেজগাঁও থানা ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় অস্ত্র-মাদক, দস্যুতা ও ডাকাতি সংক্রান্তে ১৩টি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত মোঃ বিজয় এর বিরুদ্ধে ডিএমপি’র তেজগাঁও থানা ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র-মাদক, দস্যুতা ও ডাকাতি সংক্রান্তে ১৭টি মামলা রয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক পিপিএম-সেবা এর নির্দেশনায় তেজগাঁও থানার ০২টি আভিযানিক টিম কর্তৃক অভিযানটি পরিচালিত হয়।