Friday, April 26সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

কালীগঞ্জে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে লাখ টাকার বাণিজ্য

হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ থেকে: মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বখাটে কলেজছাত্র ফয়সাল ও হাসানের হাতে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা ১ সন্তানের জননী ১ গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে কথিত বিচারপতিদের লাখ টাকার বাণিজ্য করলেও ধর্ষিতার পরিবারকে কোন টাকা দেওয়া হয়নি।

ঘটনাটি ঘটেছে গত ৪ মার্চ শনিবার রাত সাড়ে ১০টার সময় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের পশ্চিম পাইকারা গ্রামে। ধর্ষণের ঘটনা কথিত বিচারের নামে ধামাচাপার বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেলে প্রকৃত সত্য জানতে সরে জমিনে বুধবার দুপুর ১২টার সময় ঘটনাস্থলে গেলে পাইকারা গ্রামের মালেক, মর্জিনা, সুমি, ইয়াসমিন সহ নাম না প্রকাশ করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি সাংবাদিকদের জানান গত ৪ মার্চ শনিবার রাতে পশ্চিম পাইকারা গ্রামের ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পাড়া মহল্লা থেকে চাদা উঠিয়ে একটি মাহফিলের আয়োজন করে।

উক্ত মাহফিল শুনে রাত আনুমানিক ১০টার সময় এক সন্তানের জননী ১ গৃহবধূ বাড়ি ফেরার পথে পশ্চিম পাইকারা গ্রামের আব্দুল আলীমের পুত্র সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী বখাটে ফয়সাল আহমেদ ওরফে তৌফিক এবং তার অপর সহপাঠী একই গ্রামের বর্তমান নলতা মাগুরালিতে বসবাসকারী খোকনের পুত্র কলেজ ছাত্র হাসান মিলে ওই গৃহবধূকে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক মারপিট করে পাশের বাগানে নিয়ে ধর্ষণ ধর্ষণ করে। ওই সময় গৃহবধু কোন রকমে রেহাই পেয়ে বাড়িতে যায়। বাড়িতে ভাটাশ্রমিক বাবা বাড়িতে না থাকায় তার মাকে বিষয়টি জানায়। ওই সময় বাড়িতে থাকা তার দাদা খোদাবক্স এবং আব্দুল হাকিম বক্স বিষয়টি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল, মিজান সহ একাধিক ব্যক্তিকে জানায়। বিষয়টি নিয়ে পাইকারা গ্রামে৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জয়নাল, মিজান এর নেতৃত্বে ১০/১২ জনের একটি দল নিয়ে কথিত বিচার ডাকে। সেই বিচারে ধর্ষক ফয়সল এবং হাসান সহ তার বাবাকে হাজির করে পুলিশের ভয় দেখিয়ে১ লক্ষ টাকা আদায় করে ছেড়ে দেয়। বিচারে ধর্ষিতার পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা এবং থানা পুলিশ, ডি,এস,বির নাম করে ৫০ হাজার টাকা আদায় করলেও সে টাকা দেওয়ার কোন সত্যতা মেলেনি। এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী ধর্ষিতার মা সাংবাদিকদের জানান মাহফিল শুনে বাড়ি ফেরার পথে ফয়সাল এবং হাসান তার মেয়েকে বাগানে নিয়ে মারপিট করে হাত ভেঙে ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। উক্ত ঘটনায় আওয়ামী লীগ অফিসে বিচার বসিয়ে ৫০ হাজার টাকা আমাদের নাম করে আদায় করলেও আমাদের এক টাকাও দেওয়া হয়নি। তিনি আরো জানান তার মেয়ে গাজিরহাট স্বামীর বাড়ি থেকে বেড়াতে এসে এই ধর্ষণের শিকার হয়। ভুক্তভোগী কন্যার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার কন্যা নানার বাড়ি গেছে বলে এড়িয়ে যান। তার দাদা খোদাবক্স ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন শুনেছি বিচারে ৫০ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে তবে অপরদাদা আব্দুল হাকিম বক্স ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সাংবাদিকদের প্রভাবিত করার চেষ্টা চালায়। ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল কাদের সাংবাদিকদের জানান বিষয়টি আমি শুনেছি বিচার বসিয়ে টাকা আদায় করা হয়েছে তবে আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা এবং আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।

কথিত বিচারপতি আওয়ামী লীগ নেতা জয়নালের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান ধর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেনি বাড়ি যাওয়ার পথে মেয়েটার শরীরে হাত দিয়ে টানাটানি হয়েছে ধর্ষণ চেষ্টা চালানো হয়েছে এবং হাত ভেঙে গেছে সে কারণে বিচার বসিয়ে ৫০ হাজার টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করেন। তবে ভুক্তভোগী পরিবার কোন টাকা না পাওয়ার বিষয়ে কোন সদুত্তর মেলেনি। তিনি আরো জানান বিষয়টি নলতা বিট অফিসার দারোগা বুলবুল কে জানিয়ে বিচার করা হয়েছে এবং পরের দিন ডিএসবি রনি ঘটনাস্থলে এসে জেনে গেছে। এ বিষয়ে থানার উপপরিদর্শক বুলবুল এবং ডিএসবি রনির নিকট ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে তারা বিষয়টি কিছুই জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান। এ বিষয়ে কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানেন না এবং কোন অভিযোগ পাইনি বলে সাংবাদিকদের জানান।

শেয়ার বাটন