Friday, March 29সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে চলছে কালীগঞ্জে অবৈধ ইটভাটা

হাফিজুর রহমান, নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে অবৈধ ব্রাদারস ব্রিকস বা ভাই, ভাই ইটভাটা ওরফে সিয়াম ভাটায় পড়ানো টায়ারের গুড়ার আগুনের ধোয়ায় এলাকার জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে গ্রাম ছাড়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়াও ইটভাটার মাটি কাঠ-বালু টানার কাজে ব্যবহৃত ভেকু, ড্রাম্পার, ট্রলি, ট্রাক চলাচল করে রাস্তার প্রতিদিন ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদীর চরের জায়গায় অবৈধভাবে মাটি কেটে ভাটার ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করে ভেড়ি বাঁধকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। অন্যদিকে পরিবেশের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
কোন প্রকার কাগজপত্রবিহীন পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া অবৈধভাবে গড়ে তোলা সরকারের ২০ বছরে কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চালাচ্ছে জামায়াত নেতা আব্দুল ওয়াদুদ এবং তার ভাইরা মিলে । বর্তমান ভাটাটি শীতলপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী জনৈক আব্দুস সবুর এবং তার স্ত্রী রুমা বেগম বছরে ২৫ লক্ষ টাকা ভাড়া চুক্তিতে অগ্রিম দুই বছরের ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে সিয়াম ভাটা নামে ভাটাটি পরিচালনা করে আসছে। আর এই অবৈধ ইট ভাটা বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী প্রতিদিন অভিযোগ পত্র হাতে নিয়ে দিনের পর দিন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, কার্যালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, সাতক্ষীরা পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয় লিখিত অভিযোগ দিলেও আজও পর্যন্ত কোন কাজ হয়নি। অবৈধ ইটভাটার কারণে আশপাশের গণপতি, শীতলপুর, বসন্তপুর, ছানকা, নাজিমগঞ্জ বাজার এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণ ভাটার কালো ধোয়ায় জিম্মে হয়ে পড়েছে।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনে ভাটা মালিকের দায়ের করা রিট রুলের আদেশে মহামান্য হাইকোর্ট বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের চেয়ারম্যান মহোদয় কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। উক্ত আদেশের কপি জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সাতক্ষীরা পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ের কর্মকর্তার নিকট লিখিতভাবে এলাকাবাসী অবগত করালেও ব্যবস্থা না নেওয়ায় হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে ভাটার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরও দেশব্যাপী এই সমস্ত অবৈধ ইটভাটা বন্ধের জন্য পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে গত ১০ নভেম্বর মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। উক্ত রিটের প্রেক্ষিতে তো ১৩ নভেম্বর বিচারপতি মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম এবং বিচারপতি মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের রুলসহ আদেশ দেন। পরিবেশ ছাড়পত্র বিহীন এইসব অবৈধ ইটভাটা সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কাঠ, টায়ার পোড়ানো কালি, জ্বালিয়ে ইট পোড়ানোর ফলে বায়ু দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামবাসী। বুধবার ১৪ ডিসেম্বর বেলা ১১ টার সময় সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায় একদিকে জ্বলছে ইটের ভাটা, পুড়ছে টায়ারের পোড়ানো কালি। অন্যদিকে ব্যবহৃত হচ্ছে মাটি, কাঠ, বালু, টানার কাজে ট্রলি, ড্রাম্পার, ভেকু, ট্রাক্টর, ট্রাক নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ জনপদের রাস্তা। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী কার কাছে অভিযোগ জানাবে এমন প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এ পর্যন্ত ভাটা বন্ধ করতে অভিযোগের স্তুপ প্রশাসনের দপ্তরে পড়ে থাকলেও দেখার কেউ নাই। বরং অভিযোগ পড়লে কর্তৃপক্ষের রমরমা বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি হয় বলে ভুক্তভোগীরা জানান। বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে উপজেলা বাসি।

শেয়ার বাটন