Wednesday, April 24সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

যথাযথ মর্যাদায় পুলিশ মেমোরিয়াল ডে উদযাপন

হাসানুজ্জামান সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি: যথাযথ মর্যাদায় পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২৩ উদযাপন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবং নিহত ৮পুলিশ পরিবারকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (১ মার্চ, ২০২৩) বেলা ১১:৩০টায় মিরপুর পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত সম্মাননা প্রদান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম-বার। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম-বার, পিপিএম।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন এবং অপরাধীদের গ্রেফতারসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যগণ অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে থাকে। যে কোন জাতীয় দুর্যোগে বাহিনীর সদস্যগণের ধৈর্য্য, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ কার্যক্রম সকল মহলে প্রশংসিত। কর্তব্য পালন করতে গিয়ে প্রতি বছর অনেক পুলিশ সদস্য নিহত হয়। দায়িত্ব পালনকালে তাঁরা আত্মত্যাগের যে মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তা গোটা পুলিশ বাহিনীকে গৌরবান্বিত করে। কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত বাংলাদেশ পুলিশের সে সকল সদস্যদের আত্মত্যাগ ও গৌরবময় অবদানকে স্মরণ করে প্রতিবছর দেশব্যাপী সমস্ত পুলিশ ইউনিটে ১ মার্চ ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ পালিত হয়। ২০১৭ সাল হতে ধারাবাহিকভাবে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ পালন করে আসছে বাংলাদেশ পুলিশ।
আলোচনা সভার শুরুতে মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম-বার বলেন, কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করার জন্য ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ এই দিনটি আমরা পালন করে থাকি। মার্চ মাস আমাদের স্বাধীনতার মাস। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কাল রাতে অনেক পুলিশ সদস্য পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ করতে যেয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের এই অবদান চির অম্লান হয়ে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকেন তাদেরকে সব সময় সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজের শরীর ও স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। রাস্তায় মোটরসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। দুর্ঘটনা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সব সময় হেলমেট পরিধান করতে হবে।
তিনি কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনাদের সন্তানদের পড়াশোনাসহ যে কোন প্রয়োজনে যখনই আমাদের সাহায্য বা সহযোগিতার প্রয়োজন হবে আমরা সব সময় আপনাদের পাশে থাকবো।
সভাপতির বক্তব্যে ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ বলেন, দেশের জন্য যে সকল পুলিশ সদস্য আত্মত্যাগ করেছেন তাদের স্মরণে এই দিনটি আমরা পালন করি। ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ ব্যবস্থার সূচনা করেছিলো বাংলাদেশ পুলিশ। তারা তাদের জীবন বিসর্জন দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়েছিলো। এই গর্বের উত্তরসূরী আমরা। আমাদের রক্তে রয়েছে দেশমাতৃকার জন্য নিজের বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দেওয়ার মতো অহংকার। বাংলাদেশ পুলিশ কখনো কোন সময় কর্তব্যের জায়গা থেকে ফিরে আসেনি। রাষ্ট্রের যে কোন প্রয়োজনে প্রথম প্রতিরোধ যোদ্ধা হিসেবে কাজ করে বাংলাদেশ পুলিশ। তাই প্রথম আঘাতটি পুলিশের উপরই আসে। বাংলাদেশ পুলিশ আত্মহুতি দিতে পারে কিন্তু দেশের সম্মানহানি হতে দেয় না।
তিনি আরো বলেন, কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের যদি কোন সহযোগিতার প্রয়োজন হয় তাহলে সাধ্যের অনুকূলে যা যা প্রয়োজন তা করা হবে।
আলোচনা সভা শেষে সারা বাংলাদেশে নিহত ২৯১ জন সদস্যদের মধ্য হতে ০৮ জন পুলিশ সদস্যদের পরিবারের মধ্যে শুভেচ্ছা উপহার সামগ্রী হস্তান্তর করা হয়।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ডিএমপি’র যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ সুপার ঢাকা জেলা ও ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনারগণসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

শেয়ার বাটন