Monday, September 8সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

নবাবগঞ্জের গোলাপগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জাল সনদ দেয়া অভিযোগ

মোঃ জুলহাজুল কবীর নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার ৩নং গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নে জীবিত দুই ব্যক্তিকে মৃতের সার্টিফিকেট দিয়ে তাদের নামের বরাদ্দকৃত বয়স্ক ও বিধবা ভাতা চেয়ারম্যান, মেম্বারদের পছন্দসই ব্যক্তির নামে প্রতিস্থাপনের অভিযোগ উঠেছে। এতে তাদের নামের বরাদ্দকৃত বয়স্ক ও বিধবা ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে । প্রতিকার চেয়ে দুই ভোক্তভোগী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন।

জীবিত থেকেও মৃতরা হলেন, ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বড় জালালপুর গ্রামের মোঃ পান মামুন, পিতার নাম লেখা নেই তবে মাতার নাম ছলে মাই। মৃত্যু সনদ অনুযায়ী গত ০৩/০৩/২৪ইং তারিখে তিনি মারা গেছেন। ৪নং ওয়ার্ডের উত্তর শ্যামপুর গ্রামের মোছাঃ অহেদা বেগম, মাতা -মোছাঃ ছাবিজন বেগম, মৃত্যু সনদে সুচতুর কৌশলে পিতার নাম লেখা হয় নাই। মৃত্যু সনদ অনুযায়ী এই বিধবা মহিলা মারা গেছেন ০১/০৫/২৪ইং। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীনে বয়স্ক/বিধবা ভাতার আওতায় তারা উপকারভোগী হিসেবে ভাতা পেয়ে আসছিলেন। গত সেশনে তাদের মোবাইল অ্যাকাউন্টে টাকা না আসায় বিষয়টি সমাজ সেবা অফিসে খোঁজ নেন।

সেখানে সমাজ সেবা অফিসার জানান, নবাবগঞ্জ উপজেলার ৩নং গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ রাশেদুল কবিরের দেয়া প্রত্যয়ন পত্রে তাদের মৃত দেখানো হয়েছে। পরবর্তীতে চেয়ারম্যানের দেয়া পছন্দসই ব্যক্তিকে তার নামে বরাদ্দকৃত ভাতা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান ।

সুবিধা বঞ্চিত মোঃ পান মামুন ও মোছাঃ অহেদা বেগমের অভিযোগ, তারা নিয়মিতই ভাতা পেয়ে আসছিলেন। গত দফা অন্যান্যদের নামে ভাতা আসলেও তাদের নামে আসেনি। পরে তিনি সমাজ সেবা অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত প্রত্যয়ন পত্রে তাদের মৃত দেখিয়ে তাদের নামের স্থলে অন্য নামে ভাতা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তারা তাদের ওয়ার্ড সদস্যদের বিষয়টি অবহিত করার পরও প্রতিকার পাননি।

সরকারী ভাতার টাকা দিয়ে তারা নিজের ব্যয় বহন করতেন। গত সেশনে তারা ভাতা পাননি। বিষয়টি জানতে তারা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে খবর নিতে গেলে তাদের জানানো হয়, ‘আপনারা তো মারা গেছেন’। তাই ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে। এ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রাশেদুল কবিরের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আসলে বিষয়টি ভুলক্রমে হয়ে গেছে। ইউপি সদস্য গোপালকে জিজ্ঞাসার জন্য ডাকলে তিনি সাংবাদিকের ক্যামেরা দেখে পালিয়ে যান। পরে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে ফোনেও আর পাওয়া যায়নি।

চেয়ারম্যান আরও জানান, একই গ্রামের একই নামে দুই ব্যক্তির এক ব্যক্তি মারা গেলে ভুলবশত জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখানো হয়েছে। এই ভুল সংশোধনের জন্য সমাজ সেবা অফিসে কাগজ পাঠানো হবে।
আমার অজান্তে ৩নং এবং ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যরা ভুলবশত এমনটি করেছে। তবে ভুল সংশোধনের জন্য আমি কাগজপত্র নিয়ে সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করতে বলবো।

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার শুভ্র প্রকাশ চক্রবর্ত্তী জানান, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সুবিধাভোগীদের নামে মৃত্যু সনদ ইস্যু করে প্রতিস্থাপনের সুপারিশ পাঠানোর প্রেক্ষিতে উক্ত ভাতাভুগী দুইজনকে মৃত দেখিয়ে তাদের স্থলে চেয়ারম্যানদের দেয়া নাম প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আমরা যেহেতু এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে তা সংশোধনের ব্যবস্থা নিব।

শেয়ার বাটন