Friday, April 19সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

জয়পুরহাটে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে সাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা

আবু রায়হান, জয়পুরহাটঃ জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে কেঁচো কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন নাজমা বেগম ও পারুল বেগমসহ প্রায় ৫০ টি পরিবারের নারী।

নিজেদের ফসলি জমিতে ব্যবহারের পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে তারা এখন প্রতিমাসে আয় করছেন প্রায় ৫/১০ হাজার টাকা। দুজন নারীর দেখাদেখী এখন অনেকে কেঁচো কম্পোস্ট স্যার তৈরীতে আগ্রহী হয়েছেন।

জানা গেছে, পাঁচবিবি উপজেলার বালিঘাটা ইউনিয়নের নওদা গ্রামের গৃহিনী নাজমা বেগম ও পারুল বেগম উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ২০২১ সালে ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল প্রোগ্রাম ফেজ প্রজেক্ট এ (এনেটিপি-২) এবং অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ীর আঙ্গিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) তৈরীতে তারা আগ্রহ প্রকাশ করেন।

তাদের দেখাদেখি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে এমনি ছোট বড় মাঝারি প্রায় ৫০ টি পরিবারের নারীরা হাউজ, চাড়ায় কেঁচো কম্পোস্ট স্যার তৈরী করছেন এবং ইতিমধ্যে লাভবান হচ্ছেন।

কৃষি অফিসের তৈরীকৃত হাউজিং পদ্ধতিতে ৫টি হাউজে নিজের গৃহ পালিত গরুর গোবর হাউজে সংরক্ষণ করে সেখানে ১ কেজি কেঁচো ছেড়ে দেন। এর ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিটি হাউজ থেকে ৫০ থেকে ৬০ কেজি কেঁচো (ভার্মি কম্পোস্ট) পান এবং ৫টি হাউজ থেকে ২৬০ থেকে ২৮০ কেজি সার পাওয়া যায়। সেই সার থেকে প্রতিমাসে আয় ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা। শুধু তাই নয় হাউজে ছেড়ে দেওয়া কেঁচোও দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। সেখান থেকে কেঁচোও বিক্রি করে আয় করছেন।

নাজমা বেগমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ সার তৈরিতে খুব বেশি সময় দিতে হয় না। পারিবারিক কাজের পাশাপাশি সার তৈরি করে আসছি। কোন সমস্যা হলে কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত পরামর্শ পেয়ে থাকি। কেঁচো সার তৈরী করে নিজের ফসলের ক্ষেতে ব্যাবহারের পাশাপাশি কেঁচো সার বিক্রি করে সংসার ও ছেলে মেয়েদের পড়াশুনার খরচ চালাচ্ছি।

একই গ্রামের পারুল বেগম জানান, সরকারের সহযোগীতায় কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রথমে নিজের ফসলের জমিতে দেওয়ার জন্য কেঁচো সার তৈরী করি। সবজির ক্ষেতে কেঁচো সার দেওয়ায় সবজির ফলন খুব ভাল হয়। পরে আরো হাউজ বৃদ্ধি করে কেঁচো সার তৈরী করি। এখন নিজের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে মাসে ৬/৭ হাজার পর্যন্ত লাভবান হচ্ছি। এই কেঁচো সারের চাহিদা খুবই বেশি।

পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান জানান, এ পর্য়ন্ত প্রায় ১০০ জন নারীকে প্রশিক্ষন দিয়েছি। পাচবিবিতে বড় হাউজে ১০ সহ মোট ৫০ টি ছোট ও মাঝারি ৪০ টি হাউজে কেঁচো সার উৎপাদন করে মাসে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করছে এখানকার নারীরা। এ অঞ্চলে জৈব পদ্ধতিতে ফসলের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই লক্ষ্যে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় ভার্মি কম্পোষ্ট উদ্যোক্তা তৈরী করেছি, যা অল্প কিছুদিনের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। তারা রাসায়ানিক সারের পাশাপাশি জৈব সার উৎপাদন করে নিজের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে অনেক লাভবান হচ্ছে।

শেয়ার বাটন