Friday, April 19সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

কালীগঞ্জে মসজিদের ইমামের ধর্ষণে কলেজ ছাত্রীর সন্তান প্রসবের ঘটনায় থানায় অভিযোগ

হাফিজুর রহমান, নিজস্ব প্রতিনিধ: প্রথমে প্রেম নিবেদন, রাজি না হওয়ায় বিয়ের প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে মসজিদের ইমাম হাবিবুল্লাহ আরবি পড়ানোর অজুহাতে ১ কলেজ ছাত্রীকে প্রতিনিয়ত ধর্ষণে গর্ভবতী ও সন্তান প্রসবের ঘটনায় থানায় এজাহার দায়ের হয়েছে। আর এ ঘটনায় ধর্ষিতা কলেজ ছাত্রীর বাবা, মা একাধিকবার চেয়ারম্যান গাজী শওকত হোসেনের কাছে অভিযোগ জানালে লম্পট ইমামকে বাঁচাতে ডিএনএ টেস্টের নামে কালক্ষেপণ করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।

ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের রত্নেশ্বরপুর গ্রামে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ধর্ষিতা কলেজ ছাত্রী বাদী হয়ে কথিত প্রেমিক লম্পট ইমাম হাবিবুল্লাহ ও তার পিতা মহসিন কবীর এবং চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গতকাল শুক্রবার (১৯ আগস্ট) থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছে। এজাহার সূত্রে এবং থানায় ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীর পিতা রত্নেশ্বরপুর গ্রামের আজগার মল্লিক, মাতা জাহানারা ভাই আলম হোসেন এবং ধর্ষিতা কলেজ ছাত্রী আছিয়া খাতুন (ছদ্মনাম) সাংবাদিকদের জানায় বছরখানেক আগে তাদের বাড়ির পাশে গোবিন্দপুর জামে মসজিদের ইমাম একই গ্রামের মহাসিন কবিরের পুত্র হাবিবুল্লাহ এর নিকট মসজিদে আরবি পড়াশোনা করতে যায়। ওই সময় ইমাম হাবিবুল্লাহ এর প্রথমে দেওয়া প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে বিয়ের প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে মসজিদের পাশে ইমামের থাকার ঘরে নিয়ে প্রতিনিয়ত জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আসছিল। ধর্ষণে কলেজ ছাত্রী ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্ব হয়ে পড়লে বিষয়টি তার বাবা-মাকে জানায়।

ঘটনা জানতে পেরে কলেজ ছাত্রীর বাবা, মা- ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী শওকত হোসেনকে জানায়। চেয়ারম্যান বিষয়টি নিয়ে বিচারের নামে প্রহসন করতে থাকে। কলেজ ছাত্রী আসিয়ার (ছদ্মনাম) গর্ভের সন্তান বড় হতে থাকলে আবারও চেয়ারম্যানের নিকট গেলে থানা পুলিশের ভয় দেখিয়ে ডিএনএ টেস্টের কথা বলে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এইভাবে তালবাহানায় গত ১৭ দিন আগে কলেজ ছাত্রী আসিয়া (ছদ্মনাম) একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে গত ১৬ আগস্ট চেয়ারম্যান শওকত হোসেন আফসার মেম্বারের বাড়িতে নিয়ে মথুরেস পুর ইউনিয়ন এর ম্যারেজ রেজিস্টার ও হাজী কফিল উদ্দিন মহিলা মাদ্রাসার সুপার রমিজ উদ্দিন কে নিয়ে বিয়ে পড়াতে গেলে চেয়ারম্যানের পরামর্শে লম্পট ইমামের বয়স কম অজুহাত দেখাইয়ে চম্পট দেয়।

এরপর থেকে লম্পট ইমাম হাবিবুল্লাহ ও তার বাবাকে এলাকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঘটনা এর সত্যতা জানার জন্য চেয়ারম্যান গাজী শওকত হোসেনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন ৫ মাস অন্তঃসত্ত্ব অবস্থায় আমাকে জানায়।
পরবর্তীতে ম্যারেজ রেজিস্টার ডেকে তাদের বিয়ে দেয়। ছেলের কয়েকদিন বয়স কম থাকায় ম্যারেজ রেজিস্টার রমিজ উদ্দিন তাদের রেজিস্ট্রি কাগজপত্র দেয় নাই তবে শুনেছি তাদের বিয়ে হয়েছে। তারা যে সমস্ত বক্তব্য দিচ্ছে সব বানোয়াট মিথ্যা। আমার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শত্রুরা কুৎসা রটাচ্ছেআমার বিরুদ্ধে। ২/৩দিন আগে আমার নিকট আসছিল আমি তাদের আইনের আশ্রয় নিতে বলেছি। বিয়ে পড়ানোর বিষয়টির সত্যতা জানার জন্য ম্যারেজ রেজিস্টার রমিজ উদ্দিন এর নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি বিয়ের কথা স্বীকার করলেও পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। ঘটনার আরও সত্যতা জানার জন্য ইমাম হাবিবুল্লাহ মুঠোফোন এ একাধিকবার যোগাযোগ করলে বন্ধ পাওয়া যায়।
।এ প্রসঙ্গে থানার অফিসার ইন চার্জ হালিমুর রহমান বাবুর নিকট ফোন দিলে তিনি রিসিভ না করায় পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত রফিকুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন তারা দুপুরে আসছিল এখনো পর্যন্ত লিখিত এজাহারের কপি হাতে পায়নি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ রিপোর্ট লেখাপর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছিল।

শেয়ার বাটন