Thursday, April 25সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবে পকেট কমিটি পন্ড: অবশেষে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিনিধি: কোন প্রকার নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে পরিবারতন্ত্রের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা প্রেসক্লাবের বহুল বিতর্কিত কার্যনির্বাহী কমিটি অবশেষে বিলুপ্ত করা হয়েছে। তবে সাধারণ সভায় আবারও পাতানো কমিটি গঠনের উদ্যোগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে প্রেসক্লাব। শেষ পর্যন্ত সাংবাদিকদের প্রতিরোধের মুখে সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) সকালে প্রেসক্লাবের সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়। ওই সভায় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল বারী সফু ও সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাশ বাচ্চুসহ কতিপয় সাংবাদিক আবারো পকেট কমিটি গঠনের পায়তারা শুরু করে। এ সময় প্রকৃত সাংবাদিকরা স্বচ্ছ নির্বাচন কমিশন গঠন করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের আহ্বান জানান। তবে এ প্রস্তাব প্রত্যাখান করে দিয়ে প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল বারী সফু আর সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাশ বাচ্চু ক্ষিপ্ত হয়ে প্রকৃত সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরণ শুরু করেন। তখন বিষযটির প্রতিবাদ করেন দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিনিধি শেখ শাওন আহমেদ সোহাগ, দৈনিক সাতনদীর উপজেলা প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান, দৈনিক সাতঘরিয়ার হাবিবুল্লাহ, দৈনিক আলোকিত সকাল’র আরাফাত আলী, দৈনিক স্পন্দন পত্রিকার আফজাল হোসেন, দৈনিক গ্রামের কাগজ পত্রিকার সুমন মাহবুব, দৈনিক আজকের পত্রিকার মাসুদ পারভেজ ক্যাপ্টেনসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। এসময় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সম্পাদক গ্রুপের নামসর্বস্ব পত্রিকার কিছু সাংবাদিকের সাথে প্রকৃত সাংবাদিকদের বাকবিতন্ডা শুরু হয় এবং পরিস্থিতি মারাত্মক খারাপ পরিস্থিতিতে রূপ নেয়। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হালিমুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করেন। এরপর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের একাংশ সাধারণ সভা বর্জন করে প্রেসক্লাব থেকে চলে আসেন। এরপর গৃহপালিত সদস্যদের দিয়ে প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সম্পাদক আবারো পকেট কমিটি গঠনের চেষ্টা করে। তবে পত্রদূত পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি ও প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ- সভাপতি নিয়াজ কওছার তুহিনসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিক সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন। তারপরও কিছু নামধারী সাংবাদিক পকেট কমিটি গঠনের চেষ্টা অব্যাহত রাখে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রেসক্লাবের কমিটি বিলুপ্ত করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন কাজী মোফাখখারুল ইসলাম নিলু, গাজী মিজানুর রহমান ও আব্দুল লতিফ মোড়ল।

এদিকে খবর নিয়ে জানা যায়, প্রেসক্লাবের সভাপতি সফুর পিতা একজন রাজাকার। তার আপন দুই চাচাকে ১৯৭১ সালে গুলি করে হত্যা করে মুক্তি বাহিনী। তার পরিবার এখনো স্বাধীনতা বিরোধী কার্যক্রম করে। সুকুমার দাশ বাচ্চু কালিগঞ্জ পাইলট বালিকা বিদ্যালযের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারি। সে স্কুলে দায়িত্ব পালন করে না। তাছাড়া সুকুমার দাশ বাচ্চু ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ নাগরিক। তার স্ত্রী ও সন্তান ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। এছাড়া প্রেসক্লাবের তালিকাভুক্ত ৫৯ সদস্যের মধ্যে অধিকাংশই নামসর্বস্ব সাংবাদিক। যে খসড়া ভোটার তালিকা করা হয়েছে সেখানে অনেক সদস্যের পত্রিকার অস্তিত্ব নেই। আবার কিছু পত্রিকা দীর্ঘদিন যাবত প্রকাশ হয় না। ওই হালনাগাদ তালিকায় ভূয়া সাংবাদিকে ভরপুর। ত্রুটিপূর্ণ ওই তালিকা বাতিল করে আবারও সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করে ও যে সকল সাংবাদিক নিয়ম মেনে সদস্য হওয়ার আবেদন করেছেন তাদেরকে সদস্যভুক্ত করে ভোটার তালিকা তৈরীপূর্বক একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন প্রকৃত সাংবাদিকরা। কিন্তু সেই দাবিতে কর্ণপাত করছেন না চেয়ার আকড়ে থাকা শীর্ষ ২/৩ জন কথিত সাংবাদিক নেতা।
এমতাবস্থায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত সাংবাদিকদের রায়ে একটি বিতর্কমুক্ত কার্যনির্বাহী গঠন না হলে প্রেসক্লাবে সংঘর্ষ ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন সাংবাদিকসহ সচেতন মহল ।

শেয়ার বাটন