

হাসানুজ্জামান সুমন,বিশেষ-প্রতিনিধি: জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, জ্ঞান অর্জনের জন্য উচ্চশিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। চিন্তার উৎকর্ষতা সাধন ও মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি বিকশিত করতে অবশ্যই উচ্চশিক্ষা দরকার। উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য শুধু শ্রমবাজার নয়, মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
সোমবার (১ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উচ্চশিক্ষা’- এমন প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
শিরীন শারমিন চৌধুরী আরও বলেন, ১৯৪৮ এর জিন্নাহ’র ঊর্দু ভাষাকে কেন্দ্র করে আন্দোলন, ’৫২ সালের ভাষা শহিদের রক্তে রঞ্জিত রাজপথ, ’৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রদান এবং ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ প্রণয়ন করেন। এই আদেশ বলে এখন পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয়ে আসছে।
খবরের কাগজের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
স্পিকার আরও বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার বেশিরভাগ তরুণ। এই তরুণদের অনেক বেশি কর্মদক্ষতা রয়েছে। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড সুবিধা কাজে লাগানোর এখনই উপযুক্ত সময়। সেজন্য তরুণদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা উন্মুক্ত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামে উচ্চশিক্ষায় জ্ঞান আহরণের পাশাপাশি যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে অভিযোজনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। তরুণদের শ্রম বাজারের উপযোগী করে বিশেষায়িত জ্ঞানে সজ্জিত করতে হবে। তথ্য প্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের যুগে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সসহ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উচ্চশিক্ষার কারিকুলামে পরিবর্তন আনতে হবে। ফ্রিল্যান্সিংসহ স্টার্টআপের বিভিন্ন ধরণের কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হবার উপযোগী করে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ২০৩৫ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চতর গবেষণাধর্মী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০৪৫ সালের মধ্যে গবেষণা-প্রধান ‘আর আই’ ক্যাটাগরির বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করতে কাজ করছে। ইতোমধ্যেই ‘অ্যাকাডেমিক মাস্টার প্ল্যান’ এবং ‘অ্যাকাডেমিক ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান’ প্রণয়ন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারের সঞ্চালনায় উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বরেণ্য শিক্ষাবিদ প্রফেসর ইমেরিটাস সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো উপাচার্য (শিক্ষা) ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ারুল চৌধুরী পারভেজ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদ এবং বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
অনুষ্ঠানে স্পিকারকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মরণিকা, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ খণ্ডসমগ্র প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনবৃন্দ, সিনেট ও সিন্ডিকেটের সদস্যবৃন্দ, প্রাক্তন উপাচার্যবৃন্দ, ফ্যাকাল্টি মেম্বারস, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকবৃন্দ, দেশবরেণ্য সাংবাদিকবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।