Thursday, April 25সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

ঈশ্বরদীতে আলোচিত রিক্সাচালক হত্যা মামলার ২ আসামী গ্রেফতার

তুহিন হোসেন, পাবনা : ঈশ্বরদীতে আলোচিত রিক্সাচালক হত্যা মামলার ২ আসামী গ্রেফতার হয়েছে। শুক্রবার ০৬ জানুয়ারি গভীর রাতে (০৩.১৫ ঘটিকায়) ঈশ্বরদী শৈলপাড়া ১২ (বার) কোয়ার্টার এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন র‌্যাব ১২।

ঈশ্বরদীতে তুচ্ছ ঘটনায় কথা কাটাকাটির জেরে গুলি করে ও ছুরিকাঘাতে রিক্সা চালক মামুন হোসেনকে (২০) হত্যা মামলার প্রধান আসামীসহ এজাহারভুক্ত নামীয় দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১২, পাবনা ক্যাম্প।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন ঈশ^রদী পৌরসভার ১ নং কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন (৪৮) ও এজাহার ভূক্ত ৩ নং আসামী মোঃ হৃদয় (২৪)।

গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঈশ^রদী শহরের শৈলপাড়ার (১২) কোয়াটার পাড়ায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এজাহারভূক্ত নামীয় পলাতক দুই আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।

আজ (শুক্রবার) বিকেলে র‌্যাব-১২, সিপিসি-২ পাবনা ক্যাম্পে র‌্যাবের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গ্রেফতারকৃত দুই আসামীকে স্বশরীরে উপস্থিত করে সংবাদকর্মীদের এই তথ্য জানানো হয়।

কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন ঈশ^রদী শহরের শৈলপাড়ার (১২) কোয়াটার পাড়ার মৃত নুর উদ্দিন ওরফে নুরু’র ছেলে। আর মোঃ হৃদয় একই পাড়ার জামাল উদ্দিনের ছেলে।

এদিকে কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনসহ নামীয় আসামী গ্রেফতারের ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে নিহত ও আহতদের স্বজনরা। একই সঙ্গে তারা বিকেলে থানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ঘটনাস্থল থেকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শুক্রবার বিকেলে গুলির একটি খোসা উদ্ধার করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের সুত্রে জানা গেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুব্রত কুমার জানান, উদ্ধারকৃত আলামতটি গুলির খোসা কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আসামীদের গ্রেফতার চেষ্টা চলছে।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবিন্দ সরকার জানান, নিহত মামুনের মা লিপী বেগম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনকে প্রধান করে চারজন নামীয় ও অজ্ঞাত আরও ৩/৪জন আসামী করা হয়েছে। মামলা দায়েরের সময় ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ও ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন সুমন ও রকির পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলো।

ওসি আরও জানান, মামলার প্রধান আসামী কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন, নামীয় ৩ নং আসামী মোঃ হৃদয়কে র‌্যাব সদস্যরা গ্রেফতার করেছে। থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

উল্লেখ্য, ঈশ্বরদীতে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে গোলাগুলিতে ১ জন নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় আরও ২ জন গুরুতর আহত হয়েছে।

বুধবার ৪ঠা জানুয়ারী রাত আনুমানিক ৮.৩০ ঘটিকার দিকে ঈশ্বরদী পৌরসভার রেলগেট কড়ইতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মামুন (২৫) শহরের পিয়ারাখালী এলাকার মো. মানিকের ছেলে। একই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন মো. শরিফের ছেলে রকি (২৫) এবং বরকি বাবুর ছেলে শুমন (৩৩)।

প্রত্যক্ষদর্শী এবং ঘটনা সূত্রে জানাযায়, ঈশ্বরদী ইপিজেড এবং প্রাণ কোম্পানির কর্মী বহনকারী গাড়ীর বেপরোয়া চলাচলের কারণে প্রায়ই এখানে নানা দূর্ঘটনা ঘটে। সেই দূর্ঘটনা রোধ করতে বেপরোয়া গাড়ি গুলোকে স্বাভাবিক ভাবে চলার জন্য তাদের গতিরোধ করে উল্লেখিত স্থানে সকল গাড়ী চালককে স্বাভাবিক ভাবে গাড়ি চালিয়ে যেতে অনুরোধ করতে থাকে ভিকটিমসহ বেশ কয়েকজন যুবক। সে সময় একটি করিমনকে থামালে অপরদিক থেকে আসা একটি লেগুনার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে করিমন চালক এবং লেগুনা চালকের মধ্যে বিতর্ক বাধে। যা উপস্থিত জনতার হস্তক্ষেপে সমাধান হয়ে দুজনেই যার যার গন্তব্যে রওনা দেন।

এরই কিছুক্ষণ পর একটি মোটর সাইকেল যোগে শহরের রহিমপুর বারো কোয়াটার এলাকার মৃত নূরু এবং ঈশ্বরদী পৌরসভার ১-নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামালের ভাই মো. আনোয়ার হোসেন (৪৫), একই এলাকার মো. জামালের ছেলে মো. হৃদয় (২৪) এবং মো. আকরামের ছেলে ইব্রাহিম মদ্যপ অবস্থায় সেখানে এসে হাজির হয়। তারা লেগুনা চালককে কে মেরেছে জানতে চেয়ে গালাগাল শুরু করেন। গালাগালে বিতর্ক বাধার এক পর‌্যায়ে আনোয়ার তার কোমর থেকে পিস্তল বের করে মামুনের কোমরের নিচে ঠেকিয়ে তাকে গুলি করলে মামুন সেখানেই মাটিতে লুটিয়ে পরে। অবস্থা বেগতিক দেখে বাকিরা পালিয়ে যেতে দৌঁড় দিলে আনোয়ার তাদের উদ্দেশ্যকরে এলোপাথারি গুলিবর্ষণ করলে রকির পিঠে গুলি লাগে। সে সময় আনোয়ারের সঙ্গীরা শুমনকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরি দিয়ে আঘাত করে সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়।

সে সময় এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠালে সেখানে দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. রহিমা ফেরদৌস মামুনকে মৃত ঘোষনা করেন। অপর দুজনের অবস্থা আশংঙ্কা জনক হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন।

শেয়ার বাটন