Friday, April 19সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

ইসির নিবন্ধন চায় ‘বাংলাদেশ গরিব পার্টি’

নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন দলগুলোকে নিবন্ধন নেওয়ার জন্য আবেদনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে আজ রোববার (৩০ অক্টোবর)। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ইসিতে ৪০টি দল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করে। আজ দুপুর পর্যন্ত ‘বাংলাদেশ গরিব পার্টি’ সহ আরও পাঁচটি দল নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করেছে।

বাংলাদেশ গরিব পার্টির সভাপতি অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান বলেন, সমাজের গরিব মানুষদের সুযোগ-সুবিধা দিতে আমাদের দলের নাম বাংলাদেশ গরিব পার্টি রাখা হয়েছে। বর্তমানে দেখা যায়, আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো বিত্তবানদের ছাড়া গরিব কাউকে নমিনেশন দেয় না। কিন্তু আমাদের দলের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে গরিব রাজনীতিবিদদের সুযোগ দেওয়া।

তিনি বলেন, কোনো নির্বাচনে জয়লাভ করা আমাদের লক্ষ্য নয়। আমাদের লক্ষ্য হলো যারাই সমাজের অসহায় ও গরিবদের সহযোগিতা করতে চায় তাদের দলে নেওয়া। গরিবদের কল্যাণে কাজ করার পাশাপাশি গরিবদের নির্বাচনে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমাদের দলের নাম বাংলাদেশ গরিব পার্টি দিয়েছি। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার কথা জানান তিনি।

ইসি জানায়, সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ৭৬টি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলেও ২০১৮ সালে একটিও নিবন্ধন যোগ্য বিবেচিত হয়নি। আগ্রহী দলগুলো শর্তপূরণ করেছে বললেও যাচাই-বাছাইয়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। অবশ্য ভোটের পর আদালতের আদেশে নিবন্ধন পেয়েছে দুটি দল।

ইসি আরও জানায়, প্রতি সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন দলগুলোকে নিবন্ধন দেওয়ার জন্য আবেদন আহ্বান করার বিধান আছে। সে মোতাবেক ২৬ মে দলগুলোর কাছে আবেদন আহ্বান করে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ১০টির মতো দল আবেদনপত্র তুলেছিল। এদের মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিয়েছিল দুটি দল। এরপর সময় বাড়ানোর জন্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দাবি জানালে আরও দুই মাস মেয়াদ বাড়ায় আউয়াল কমিশন।

সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০০৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো দলগুলোকে নিবন্ধন দেয়। সেসময় ১১৭টি দল আবেদন করেছিল। যাচাই-বাছাইয়ের পর নিবন্ধন পায় ৩৯টি দল। সবশেষ দল নিবন্ধনের জন্য ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ইসি। তখন সময় দেওয়া হয়েছিল ওই বছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এতে নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছিল ৭৬টি রাজনৈতিক দল। কে এম নুরুল হুদা কমিশন নানা কারণে সবার আবেদন বাতিল করেছিল। পরে আদালতের আদেশে নিবন্ধন পায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস। সবমিলিয়ে গত ১৪ বছরে মোট ৪৪টি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে ইসি। এর মধ্যে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ও আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিলও করা হয়। ফলে বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৩৯টি।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিবন্ধনের জন্য যে ৪০টি দল আবেদন জমা দিয়েছিল— নৈতিক সমাজ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল রিপাবলিকান পার্টি, মুসকিল লীগ, নতুন বাংলা, বঙ্গবন্ধু দুস্থ ও প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক মুক্তি আন্দোলন (বিজিএমএ), বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টি (কেএসপি), বাংলাদেশ ইত্যাদি পার্টি, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক জোট (পিডিএ), বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি), বৈরাবরী পার্টি, বাংলাদেশ বিদেশ প্রত্যাগত প্রবাসী ও ননপ্রবাসী কল্যাণ দল, বাংলাদেশ জনমত পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ আম জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ডেমোক্রেসি মুভমেন্ট (বিডিএম), বাংলাদেশ তৃণমূল জনতা পার্টি (বাংলাদেশ টিজেপি), আমার বাংলাদেশ পার্টি-এ বি পার্টি, সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম, বাংলাদেশ এলডিপি, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল গ্রীন পার্টি, বাংলাদেশ সার্বজনীন দল, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক লীগ, গণ রাজনৈতিক জোট-গর্জো, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), নতুন ধারা বাংলাদেশ-এনডিবি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা লীগ, বাংলাদেশ জাতীয় দল, কৃষক শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ তৃণমূল লীগ ইত্যাদি।

শেয়ার বাটন