Thursday, April 25সময়ের নির্ভীক কন্ঠ
Shadow

ইছামতি নদীতে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

শাহীন‌উজ্জামান শাহীন, ঢাকা থেকেঃ বর্ষাকাল আসলেই বর্ষা মৌসুমে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সূত্রধরে ঢাকা নবাবগঞ্জে ইছামতি নদীতে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।

যদিও ইছামতিতে পানি কম,তবু ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউথ ক্লাবের উদ্যেগে ইছামতি নদীতে আয়োজন করা হয় নৌকা বাইচ।

বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে বড় বড় বাইচের নৌকা মাঝি-মাল্লার বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ আর ছন্দ মাতিয়ে তোলে ইছামতি নদীর দুই তীর। নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার নারী পুরুষ এ দৃশ্য দেখতে ভিড় করে।

গতকাল শুক্রবার ঢাকার নবাবগঞ্জে ইছামতি নদীতে হয় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য নৌ-র‌্যালি। বাইচে দুপুর থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থীরা ভিড় করেন।

আশপাশ ও দূর দূরান্ত থেকে নারী পুরুষসহ সব বয়সী মানুষ নৌকা বাইচ দেখতে নদীর তীরে জড়ো হন। বাইচে বিভিন্ন এলাকা থেকে সুসজ্জিত ঘাসী নৌকা অংশ গ্রহণ করে। এদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য আগলার লিটনের নৌকা,

আলালপুরের মোহাম্মদ আলী মিস্ত্রী,মাঝিরকান্দার খান বাড়ি, শ্রীনগর আলমপুরের মামা ভাগিনা,দেওতলার শিকদার বাড়ি,কাউনিয়া কান্দি কাঞ্চন নগরের নীল তরী ও কৃষ্ণনগরের দাদা নাতী মোহন মণ্ডল,

খানেপুরের শেখ বাড়ি,সিরাজদিখানের তুফান নৌকা অংশ গ্রহণ করে। জোড়ায় জোড়ায় টান দেয় নৌকা গুলো।

নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক রাশিম মোল্লা সংগঠনের পক্ষ থেকে দুই দফা দাবির কথা জানান।

১। দ্রুত ইছামতি নদী সচল করতে সোনাবাজু বেড়িবাঁধে প্রয়োজনীয় জলকপাট স্থাপন

২। প্রতিটি জেলা উপজেলায় সরকারি ভাবে নৌকা বাইচ আয়োজন করলে নৌকা বাইচ ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে। অন্যথায় নৌকা বাইচ খুব সহসাই বিলুপ্ত ঘটবে।

সূত্র জানায় ২০১০ সালে এই বাঁধে পর্যাপ্ত স্লুইচগেট, ইছামতি নদীর ৭২ কিলোমিটার খনন করার দাবি জানিয়ে স্মারক লিপি দিয়েছি।

শুনেছি বেশ কিছু দূর এগিয়েছে। তবে কবে তা আলোর মুখ দেখবে তা কেউ জানে না। আমরা আমাদের মাননীয় এমপি সালমান এফ রহমানের হস্তক্ষেপ কমানা করছি।

তিনিই পারেন আমাদের এই সমম্যা সমাধান দিতে। নৌকা বাইচ দেখতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন,একে অপরে বেশ কয়েকটি টান দিয়েছেন। আমরা খুব আনন্দ পেয়েছি। এই ঐতিহ্য টিকে থাক আজীবন। নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটির সহ-সভাপতি

নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. হরগোবিন্দ সরকার অনুপ বলেন,নবাবাগঞ্জে নৌকা বাইচের ঐতিহ্য প্রায় শত বছরের।

এক দশক আগেও ইছামতি নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে পুরো ভাদ্র মাস জুড়ে নৌকা বাইচ হতো। কিন্তু এখন নদীতে পর্যাপ্ত পানি না থাকা ও কচুরিপানার কারণে নৌকা বাইচে ভাটা পড়েছে।

বেশ কয়েকটি পয়েন্টে কচুরীপানা থাকায় এ বছর নৌকা বাইচ আয়োজন করা গেল না। আর এজন্য দায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২০০১ সালে ইছামতি নদীর উৎপত্তি স্থল কাঁশিয়া খালীতে বেড়িবাঁধ দেয়া হয়।

কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের অদক্ষতা ও অপরিপক্কতায় বাঁধের ইছামতি-পদ্মা নদীর সংযোগ স্থলে জলকপাট (স্লুইস গেট) স্থাপন না করে অন্যত্র স্লুইসগেট স্থাপন করা হয়। যে কারণে নদীটি আজ বিলুপ্তির পথে।

শেয়ার বাটন