

তরিকুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “উন্নয়ন বরাদ্দে বৈষম্য থামছে না: স্থানীয় সরকার ও যুব-ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার পিএসের বরাদ্দ সিন্ডিকেট সাতক্ষীরায় ৩৯ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ” শিরোনামে সংবাদ প্রচারের তীব্র নিন্দা ও কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে সাতক্ষীরা উন্নয়ন সমন্বয় ফোরাম।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা উন্নয়ন সমন্বয় ফোরামের সভাপতি ইকবাল মাসুদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সংবাদের শিরোনামে উল্লেখিত ৩৯ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের বিষয়টি অসত্য উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, বৈষম্যে জর্জরিত সাতক্ষীরা জেলা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য দ্রæত পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া সাতক্ষীরা জেলা বাংলাদেশের অন্যতম একটি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ জেলা, যেটা জাতীয় রাজস্বতে একটি বড় ভূমিকা রাখে। সেই এই জেলায় গত ১৫ বছর কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া পায়নি। এই জেলার রাস্তা-ঘাটের বেহাল দশা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা জরাজীর্ণ। কৃষি, মৎস্যচাষ, কৃষি-রপ্তানি ও বাণিজ্যের কারণে জেলার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে ও জাতীয় অর্থনীতিতে দৃশ্যমান ভূমিকা থাকা সত্তে¡ও সাতক্ষীরা জেলা বৈষম্যের শিকার। এছাড়াও এই জেলার উন্নয়নে প্রয়োজন নদীর বাঁধ ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, জলাবদ্ধতা নিরসনের জরুরী ব্যবস্থা নেয়া, ভোমরা স্থল বন্দরের উন্নয়ন, সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস পুনঃপ্রতিষ্ঠা, আধুনিক স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র এবং হ্যাচারী ও আধুনিক ফ্রিজিং প্ল্যান্টসহ অবকাঠামো উন্নয়ন, পর্যটন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের মাধ্যমে এগিয়ে যাবে সাতক্ষীরাসহ দেশের অর্থনীতি।
জানা যায়, দেশের সবচেয়ে অবহেলিত জেলার মধ্যে রংপুর বিভাগ এবং সাতক্ষীরা জেলা অন্যতম। এরই ধারাবাহিকতায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া এবং সচিবের সরেজমিনে রংপুর বিভাগ ও সাতক্ষীরা জেলা পরিদর্শন করেন এবং নিজেরা উপস্থিত থেকে উন্নয়ন বাজেট নির্ধারণ করেন। এই প্রেক্ষাপটে, রংপুর বিভাগের প্রতিটি উপজেলায় পাবলিক লাইব্রেরি স্থাপনের জন্য বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে, প্রখর শীতের প্রভাব মোকাবিলায় জেলার প্রতিটি অবহেলিত ও দুস্থ পরিবারের জন্য কম্বল বিতরণ নিশ্চিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মাসে উপদেষ্টা নিজেই উপস্থিত থেকে গাইবান্ধা জেলায় ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতুর উদ্বোধন করেন, যার প্রকল্প ব্যয় ছিল প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো, আমরা সাতক্ষীরাবাসী রংপুরের তুলনায় প্রায় কিছুই পাইনি। বরং, সাতক্ষীরা জেলার প্রধান সড়কের চারলেন উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদিত বাজেট পর্যন্ত বিনা ব্যাখ্যায় কর্তন করা হয়েছে। আমরা, সাতক্ষীরার জনগণ, এই দীর্ঘদিনের অবহেলা ও বৈষম্য আর মেনে নিতে চাই না। আমরা চাই সকল প্রকার বৈষম্য, অবহেলা ও রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা দূর করে সাতক্ষীরার সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা হোক। রংপুরের উন্নয়নকে আমরা স্বাগত জানালেও, একইসাথে সাতক্ষীরার প্রতি বারবার অবহেলা ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে আমরা জোর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
অবহেলিত সাতক্ষীরা জেলায় বর্তমান সরকার এই বৈষম্য নিরসনের জন্য কিছু উন্নয়নের উদ্যেগ নিয়েছে ঠিক সেই সময় সাতক্ষীরার উন্নয়নকে পিছিয়ে দিতে ও এই অবহেলিত জেলার মানুষের উন্নয়নের বিরোধিতা করে একটি চক্রান্তকারী গোষ্ঠী সাংবাদিকদের ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করিয়েছে। সাতক্ষীরা জেলাবাসীর পক্ষে এই মিথ্যা এবং বিভ্রান্তকর সংবাদের তীব্র নিন্দা ও কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে সাতক্ষীরা উন্নয়ন সমন্বয় ফোরাম। পাশাপাশি এ ধরনের অপপ্রচার বন্ধ ও সাতক্ষীরার উন্নয়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছে সাতক্ষীরার সর্বস্তরের জনগণসহ এই সংগঠনটি।