

সীমান্ত ডেস্ক:
১০ জনের নামের তালিকা চূড়ান্ত করেছে সার্চ কমিটি। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে বৈঠক শেষে এ কথা জানানো হয়। এখন তালিকা যাচ্ছে রাষ্ট্রপতির কাছে। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চারজনকে কমিশনার নিয়োগ করবেন।
তবে কে হচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং কারা হচ্ছেন অন্য কমিশনার সারা দেশের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে এ নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। নাম পাঠানো হলেও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে চূড়ান্ত ১০ জনের নাম গোপন রাখা হচ্ছে। দেশের সুশীল সমাজ, সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ ও রাজনীতিবিদরা স্বচ্ছতার জন্য নাম প্রকাশের দাবি জানান।
এর আগে গত রোববার সার্চ কমিটির বৈঠকে ব্যাপক পর্যালোচনা করে ১২-১৩টি নামের সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়। সেখান থেকেই গতকাল ১০ নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই সম্ভাব্য সিইসি ও ইসি হিসেবে আলোচনায় এসেছে বেশ কজনের নাম।
পর্যালোচনা করে নতুন নির্বাচন কমিশনের জন্য ২৬ রাজনৈতিক দল, ছয় পেশাজীবী সংগঠন ও ব্যক্তিগতভাবে প্রস্তাব করা ৩২২ নামের মধ্য থেকে ১০ জনের তালিকা ঠিক করতে এ পর্যন্ত আট দফা বৈঠক করে সার্চ কমিটি। সার্চ কমিটিকে নতুন নির্বাচন কমিশনের জন্য ১০ জনের নামের তালিকা সুপারিশ করতে ১৫ কার্যদিবস সময় দেয়া হয়। সে হিসাবে এ কমিটির হাতে সময় ছিল ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে সার্চ কমিটি তার আগেই রাষ্ট্রপতির কাছে নাম সুপারিশ করছে।
নতুন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সবচেয়ে বেশি গুঞ্জন রয়েছে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার নাম। তিনি ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর থেকে ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব ছিলেন।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ সফিউল আলমের নামও সম্ভাব্য সিইসি হিসেবে জোরালো আলোচনায় আছে। তিনি ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সাবেক প্রতিরক্ষা সচিব এবং আইন, বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব হাবিবুল আওয়ালের নামও রয়েছে। এছাড়া সম্ভাব্য সিইসি হিসেবে আলোচনায় আছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব আবদুল করিম, নজিবুর রহমান ও সাবেক পিএসসি চেয়ারম্যান ও নির্বাচন কমিশন সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিকের নাম।
আরও রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মমতাজউদ্দিন আহমেদ, সাবেক সচিব শেখ ওয়াহেদুজ্জামান, সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান, সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, হেলালউদ্দিন আহমেদ, জাফর আহমেদ খান ও মুহিবুল হকের নামও।
আর চার নির্বাচন কমিশনার পদের জন্য যাদের নাম আলোচনায় আছে তারা হলেন— সাবেক সচিব অপরুপ চৌধুরী, কামরুন নাহার, কানিজ ফাতেমা, কামালউদ্দীন তালুকদার, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেসুর রহমান, সাবেক সচিব মুশফিকা ইকফাত, অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. ফাইজুর রহমান, বারডেম হাসপাতালের সাবেক মহাপরিচালক ডা. নাজমুন নাহার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাকিয়া পারভীন, সিরাজুল হক খান, সাবেক সচিব; স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও বিচারপতি শামসুন্নাহার বেগমের নামও বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে শোনা যাচ্ছে।
বৈঠক শেষে অনুসন্ধান কমিটিকে সাচিবিক সহায়তার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশের জন্য ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করেছে অনুসন্ধান কমিটি। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নামের তালিকা জমা দেয়া হবে। ১০ জনের মধ্য থেকে একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং চারজনকে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। তবে চূড়ান্ত তালিকায় কাদের নাম আছে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
অনুসন্ধান কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।