

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নারকীয় গণহত্যায় শহীদদের দেহাবশেষসমূহের অবশিষ্টাংশ সমাধিস্থ করা হয়েছে।
সোমবার (১১ এপ্রিল) সকাল দশটায় সেনাবাহিনীর উদ্যোগে, মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে এসব দেহাবশেষ সমাধিস্থ করা হয়।
এর আগে ১৯৯৯ সালে মিরপুর ১২ নম্বরে নূরী মসজিদের সংস্কার কাজ চলার সময় মাথার খুলিসহ বেশ কিছু হাড় উদ্ধার করা হয়। এগুলো গণহত্যার নিদর্শন কিনা তা নিশ্চিত করতে ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি নমুনা পরীক্ষা করে।
পরে দেহাবশেষের কিছু অংশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এবং কিছু সেনাবাহিনী জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হয়। আর বাকি অংশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আজ সমাধিস্থ করা হলো।
এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রধান ড. এম এ হাসান।
১৯৭১ সালে রাজধানীতে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিলো তার একটি বড় কেন্দ্র ছিল মিরপুর। এখানে বসবাসকারীদের একটি বড় অংশ ছিল বিহারি জনগোষ্ঠী, যাদের মধ্যে পাকিস্তানের সমর্থকরা এ গণহত্যায় অংশ নেয়, যার অন্যতম নেতা ছিলেন কাদের মোল্লা।
১৯৯৯ সালে মিরপুরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে খননকাজ চালানোর সময় বেশ কিছু হাড়গোড় পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৭০টি মাথার খুলি এবং ৫৫৬টি হাড়গোড় মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নিয়ে যায়।
বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হলেও, মিরপুর স্বাধীন হয়েছিলো তারও বেশ কিছুদিন পরে, ৩১ ডিসেম্বর।
এই সময়ের মধ্যে বড় ভাই শহীদুল্লাহ কায়সারকে খুঁজতে মিরপুরে গিয়ে আর ফিরে আসেননি দেশের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হান। তিনি ছাড়াও এ সময়ে আরও অনেকে গণহত্যার শিকার হন বলে ধারণা করা হয়।
২৩ বছর আগে মিরপুরে খুঁজে পাওয়া দেহাবশেষের মধ্যে তাদের কারও দেহাবশেষ আছে কিনা তা জানতে এতদিন পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো হলেও, কারও সাথে ডিএনএ নমুনায় মিল পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
স্বাধীনতার ৫০তম বছরে এসে তাই রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় এসব দেহাবশেষ সমাহিত করা হল।